দীর্ঘ দিন ধরে উশর এর উপর পড়াশুনা করে ও প্রায় এক যুগ ধরে মায়দানে দ্বীন কায়েমের জন্য উশর সংগ্রহের অভিযানে জড়িত থেকে মনে করেছিলাম উশর একটি বই জাতির সামনে উপষ্থাপন করব । আল্লাহর অশেষ মেহেরবাণিতে এ প্রচেষ্টা সফল হতে যাচ্ছে দেখে আল্লাহর শুকরিয়া আদা য় করছি । আলহামদুলিল্লাহ। উশর প্রদান আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি ফরজ হুকুম । অথচ ইসলামি ইসলামি রাষ্ট্র ও সরকারের অনুপস্থিতির ফলে হুকুমটি দেশের বেশির ভাগ জনগনের কাছে তা অপ্রচলিত হয়ে গেছে । এ ফরজ হুকুমটির পুণর্জীবনের লক্ষ্যে বইটি লিখলাম । যতদিন দেশের সরকারি ব্যবস্থাপণায় এ ফরজ হুকুমটি বাস্তবায়ন না হবে ততদিন জনগণের কপালে সুফল আসবে না অ যত দ্রুত ইসলামি রাষ্ট্র গঠিত হবে তত দ্রুত এর সফল বাস্তবায়ন হবে বলে আমরা মনে করি । সুতরাং যারা কন্টেন্টটি অধ্যায়ন করবেন তাদের কাছে আকুল আবেদন নিজেরা এ আমল শুরু করে এখন থেকেই জনগণকে এ সফল পৌছে দেয়ার জন্য ময়দানে নেমে পড়বেন বলে আশা করি । ভুল এূটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখে তা সংশোধনে সহযোগিতা করবেন । আল্লাহ আমাদের সকলকে ক্ষমা করুন পরিপূর্ণ প্রচেষ্টা চালানোর তাওফিক দিন -আমিন ।
দ্বিতীয়ত ঃউশর সম্পর্কে কেউ বলেন যেহেতু সরকার জমির খাজনা নেয় তাই তার উশর দেয়া লাগবে না । এখন চিন্তা করা দরকার জমির খাজনা দেয়া এটা মানুষের নির্দেশ,আর জমির উৎপন্ন ফসলের উশর দেয়া আল্লাহর নির্দেশ । আমরা কার নির্দেশ মানব -মানুষের না আল্লাহর ? মুসলমান হলে অবশ্যই আল্লাহর নির্দেশ কে মেনে নিতে হবে । যাকাত যেমন আয়কর দিলেও মাফ হয় না ,যাকাত ফরজ থেকেই যায় ।তেমনি জমির খাজনা দিলেও ফসলের উশর মাফ হয় না ,উশর দিতেই হবে ।
আল্লাহর নির্দেশে জুলুম নেই
আল্লাহর নির্দেশের মধ্যে কোন জুলুম নেই,কিন্তু মানুষের নির্দেশের মধ্যে জুলুম আছে । যেমন জমিতে ফসল হলে উশর দাও ,ফসল না হলে কোন উশর নেই,কিন্তু খাজনা ?জমিতে ফসল হলে খাজনা দিতে হবে -না হলে ও খাজনা দিতে হবে । অনেক সময় গরিব লোক ঘরের ঘটিবাটি বিক্রি করে সুদসহ খাজনা দিতে বাধ্য হয় । এটা নিঃসন্দেহে একটা জুলুম । উশরে কোন জুলুম নেই -ফসল হলে দাও ,না হলে না দাও।
তিনিই সৃষ্টি করেছেন নানা রকমের লতা ও বৃক্ষের বাগান খেজুরের বাগান ,রকমারি খাদ্য ফসলের ক্ষেত যাইতুন ও ডালিমের গাছ -যা দেখতে এক রকম ও স্বাদে বিভিন্ন রকমের । তোমরা গাছের ফল ফসল থেকে খাও যখন উহা ফল ফসল দিবে । আর উহার হক আদায় করে দাও উহার কাটাই মাড়াই এর দিনেই । এ ব্যপারে সীমা লঙ্ঘন কর না কেননা আল্লাহ সীমা লংঘনকারীদের ভাল বাসেন না ।
উল্লেখ্য যে আয়াতটিতে তিনটি কথা বলা হয়েছে – প্রথমত ফসলের মালিককে খাবার নির্দেশ দেয়া হয়েছে । যিনি ফসল ফলাবেন তার প্রথম অধিকার তিনি তা থেকে খাবেন ।
দ্বিতীয়তঃ উহার হক আদায় করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে । এখানে বলার অপেক্ষো রাখে না যে ফসল মাড়ায়ের দিনে
বুখারি ,মুসলিম ,আবু দাউদ ,তিরমিযি ও নাসাঈ গ্রন্থে উল্লেখিত একটি হাদীস আবু সাইদ খুদরী (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যাতে বলা হয়েছে – পাঁচ ওয়াসাক খেজুর বা বীজ দানার কম পরিমানে উশর নেই ওজন অনুযায়ী পাঁচ ওয়াসাক সমান বিশ মন। অন্য বর্ণনায় প্রায় আঠাশ মন । আলোচ্য হাদীসের আলোকে যাও ঃ বিশ মন ফসল উৎপন্ন হবে তাকে উশর দিতে হবে ।
উশরের নিসাব ঃঅধিকাংশ ইমামের মতে উশরের নিসাব পাঁচ ওয়াসাক জমির ফসলের পরিমান পাচ ওয়াসাক হলে তার উশর আদায় করতে হবে ।
পাচ ওয়াসাক হলে ফসল মাড়ায়ের দিন উশর বের করে দিতে হবে ষাট সা তে এক ওয়াসাক হয় এক সা প্রায় পৌনে তিন সের ওজন হলে পাঁচ ওয়াসাকে প্রায় ২০ মন ওজন হয় । ২০ মন ফসল হলে তাতে উশর বের করতে হবে ।
পরিমান যাই হোক উশর দিতে হবে
ইমাম আবু হানিফা (রহ) এর মতে জমির ফসল ফলাদিতে ন্যূনতম কোন পরিমাণ নেই । জমি থেকে যাই উৎপন্ন হোক এবং যে পরিমানই উৎপন্ন হোক তাতে উশর বের করে দিতে হবে । যেসব হাদিসে পাঁচ ওয়াসাক নেসাবের উল্লেখ আছে , ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর মতে উহা ব্যবসায় পণ্যের যাকাতের ক্ষে েএ প্রযোজ্য । দুঃখজনক হলো যে ইমাম আবু হানিফা আল্লাহর নির্দেশ লংঘন করেছে এবং রাসুল (সা) নির্দেশ অনুযায়ী মেপে উশর দশ ভাগের এক ভাগ বা নিসফে উশর -বিশ ভাগের এক ভাগ বের করেনি সেহেতু সে রাসুল (সা) নির্দেশ লংঘন করেছে । কুরআন সুন্নহর বিধান লংঘনকারী আল্লাহর সন্তুষ্টি পেতে পারে না । উদাহরণ স্বরুপ কোন এক ব্যক্তি আল্লাহ ও তার রাসুল (সা) অনুযায়ী সময়মত ও পরিমান মত নামাজ আদায় না করে যদি এক সাথে দিনে বা রাতের কোন এক সময়ে দিনের সকল নামায আদায় করে তবে তার নামাজ আদায় হবে না । তিনি যখন যে পরিমাণ এবং যেভাবে দেখিয়ে দিয়েছেন তখন ,সে পরিমাণ ও সেভাবে তা আদায় করতে হবে । এটাই ইসলামের বিধান । উল্লেখ্য যে রাসুল (সা) কখনো কখনো প্রয়োজনে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা রা কে আংগুর ও খেজুরের বাগানে অনুমান করে যাকাত নির্ধারণ করতে পাঠাতেন । হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা রা অনুমান করার বিষয়ে অভিঙ্গ ছিলেন । কোন কোন ক্ষে ে এ পরিমাপ সম্ভব না হলে অনুমানের ভিওিতে হলেও উশর ও যাকাত আদায় করতে হবে । এখানে উশর ও যাকাত বের করার গুরুত্ব কত বেশি সে কথাউ প্রমাণ করে ।
যাকাত অস্বীকারীদের বিরুদ্ধে জিহাদ
হযরত আবু বকর (রাঃ) এর সময় অর্থনৈতিক ইবাদাত যাকাতকে অস্বীিকার করে কিছু লোক তা দিতে নারাজ হয়েছিল । ইতিহাসে এদেরকে মুনকেরীনে যাকাত বা যাকাত অস্বীকারকারী বলা হয়েছে ।
যে সমস্ত জমি বৃষ্টির পানিতে সিক্ত হয় ও তার দ্বারা ফসল উৎপন্ন হয় সে গুলোতে দশ ভাগের এক ভাগ উশর দিতে হবে ।
২. বাকী যে সমস্ত জমিতে সেচ ব্যবস্থা ছাড়া ফসল হয় না যেমন -আমন ধান ইরি ও বোরো ধান ধান এগুলোতো বিশ ভাগের এক ভাগ (নিশফে উশর ) দিতে হবে । এসব জমিতে যদি কখনও তাকমত আসমানের পানি দ্বারাই ফসল হয়ে যায় ,সেচ ব্যবস্থা না লাগে তবে তখন দশ ভাগের একভাগ উশর বের করতে হবে।
কি পরিমান হলে উশর দিতে হবে
পবিএ কুরআনে ফসলের উশর ফরজ বলে দেয়া হয়েছে । কিন্তু কি পরিমাণ হলে উশর ফরজ বলে দেয়া হয়েছে। কিন্তু কি পরিমান হলে উশর ফরজ হবে তা বলে দেয়া হয়নি । বরং
বলা হয়েছে জমি থেকে যা উৎপন্ন কর তা থেকেই ফসল মাড়ায়ের দিনেই বের করে দাও। সুরা আল বাকারা ২৬৭ নং আয়াত ও সূরা আনয়ামের ১৪১ নং আয়াতের দলীল অনুযায়ী উৎপাদিত ফসল ফলাদি থেকে উশর দিতে হবে । এ ব্যপারে পরিমাণ ও আদায়ের নিয়ম রসুলে করিম (সা) নিজে হাদিসের মাধ্যমে বলে দিয়েছেন ।
স্বর্ণ ৯২ গ্রাম ২.৫% ব্যক্তিগত রোপ্য৫৯৫ গ্রাম ২.৫% ব্যক্তিগত নগদ টাকা পয়সা স্বর্ণ বা রোপ্যর ২.৫% ব্যক্তিগত নগদ টাকা পয়সা স্বর্ণ বা রোপ্যর ২.৫% বর্তমান।