কবর যিয়ারতের সঠিক পদ্ধতি

🟡কবর জিয়ারতের হেকমত

কবর জিয়ারতের তিনটি উদ্দেশ্য রয়েছে ঃপ্রথম ঃআখেরাতের স্মরণ,উপদেশ গ্রহণ ও মৃতদের দ্বারা নসিহত নেওয়া ।                                                                                                     দ্বীতিয়ঃমৃতদের প্রতি এহসান করা যেমন ঃ তাদের জন্যে ক্ষমা ও দয়া ভিক্ষার দয়াভিক্ষার দোয়া করা ঃকারণ জীবতরা যেমন তাদের সাক্ষাৎ করলে ও হাদিয়ে দি লে খুশি হয়  এর দ্বারা তেমনি মৃতরাও খুশি হয় ।                                                                                                           তৃতীয়ঃ                                                                                                                          জিয়ারতকারী তার নিজের প্রতি এহসান করে ,কারণ এর দ্বারা  সে কবর জিয়ারতে শরয়িতের সুন্নত অনুসরণ করে  এবং সওয়াব অর্জন করে ।                                                         কবর জিয়ারতের বিধানঃ                                                                                                         পুরুষদের জন্যে কবর জিয়ারত করা সুন্নত:কারন এর দ্বারা আখেরাত ও মৃত্যুর কথা স্মরণ হয় ।জিয়ারত শিক্ষা ও নসিহত গ্রহণ এবং মৃতদের প্রতি সালাম দেওয়া ও তাদের জন্য দোয়ার উদ্দেশ্যে হতে হবে।মৃতদেরকে ডাকা বা তাদের বা কবরের মাটি দ্বারা বরকত হাসিল উদ্দেশ্যে নয়; কারণ এসব কার্যাদি নাজায়েজ।

মহিলাদের কবর জিয়ারতের বিধানঃ মহিলাদের কবর জিয়ারত করা কবিরা গুনাহ। অতএব  নারীদের জন্যে কবর জিয়ারত করা নাজায়েজ।কিন্তু যদি কোন মহিলা  জিয়ারতের উদ্দেশ্য ছাড়া কবরস্থানে পাশ দিয়ে  অতিক্রম করে তবে সুন্নত হলো সে কবরবাসীকে সালাম দিবে এবং কবরস্থানে  প্রবেশ না করে তাদের জন্যে যে সকল দোয়া উল্লেখ হয়েছে তা দ্বারা দোয়া করবে ।       মৃতদের জন্যে দোয়া করার বিধানঃ                                                                                      সকল জীবিত মানুষের জন্যে মৃতদেরকে আহ্বান করা ,বিপদ মুক্তির জন্য ডাকা ,হাজত পূরণ ও বালা -মুসিবত দূরের জন্য চাওয়া,নবী-রসূল ও সৎলোকদের কবরের তওয়াফ ইত্যাদি করা,কবরের নিকট জবাই করা  এবং কবরকে মসজিদ বানিয়ে নেওয়া সম্পূর্ন হারাম ও বড় শিরক যার কর্তাকে আল্লাহ জাহান্নামের আগুনের ভয় প্রদর্শন করেছেন ।

আয়েশা (রাঃ)  থেকে  বর্ণিত ,তিনি বলেন রসুলুল্লাহ তার অন্তিমকালে  বলেন ঃইহুদি ও খৃষ্টানদের প্রতি আল্লাহর অভিশাপ ,যারা তাদের নবিগণেল কবরগুলোকে মসজিদ বানিয়ে নিয়েছিল ।তিনি আয়েশা বলেন যদি মসজিদ বানিয়ে নেওয়ার ভয় না থাকত তবে তার (রাসুল ) এর কবর বাইরে প্রকাশ্য স্থানে  করা হত।

কবর জিয়ারতকারীদের  প্রকারঃ যারা মৃতদের ক্ষমার জন্য আল্লাহর  কাছে দোয়া করে । আর তাদের  অবস্থা দ্বারা উপদেশ গ্রহণ করে ও আখেরাতকে স্মরণ করে । ইহা শরিয়ত সম্মত জিয়ারত ।                                                                                                                                        যারা কবর জিয়ারতের সময় নিজের  ও অন্যান্যদের জন্য আল্লাহর নিকট  দোয়া করে । এ নিয়তে  যে কবরের পার্শ্বে দোয়া করা মসজিদের চেয়েও উওম । ইহা জঘন্য বিদআত।          যারা কবর জিয়ারতের সময় বিভিন্ন নবী-রসূল বা অলি -পীরের মর্যাদা বা হক দ্বারা আল্লাহর কাছে অসিলা করে । যেমন বলে ঃহে আমার প্রতিপালক অমুকের মর্যাদার মাধ্যমে তোমার নিকট  চাচ্ছি। ইহা বিদআত; কারণ শিরক পর্যন্ত পৌছে  দেয়ার জন্য  ইহা এক বড় মাধ্যম।  যারা আল্লাহকে আহ্বান করে না বরং কবরবাসীকে ডাকে।যেমন বলে হে  আল্লাহর নবী অথবা  হে আল্লাহর অলি কিংবা  হে অমুক আমাকে এমনটা দান করুন  বা আমাকে রোগ মুক্তি দাও ইত্যাদি ।ইহা বড় শিরক যা মিল্লাতে  ইসলাম থেকে খারিজ করে দেয় ।

মুশরেকদের কবর জিয়ারতের বিধান ঃ                                                                    অমুসলিমদের কবর  উপদেশ গ্রহনের জন্য  জিয়ারত করা জায়েজ । তবে তার জন্য দোয়া ও ক্ষমা চাওয়া যাবে না বরং তাকে জাহান্নামের সুসংবাদ  জানাবে ।

কবরস্থান ওয়াজ ও উপদেশ গ্রহণের স্থান । সুতরাং সেখানে কোন প্রকার গাছ লাগানো ,টাইলস দ্বারা  রাস্তা  বানানো ও লাইট জ্বালিয়ে  আলোকিত করা এবং  যে কোন সৌন্দর্যকরণ জায়েজ নয় ।

আনাস ইবনে মালেক থেকে বর্ণিত তিনি বলেন  রাসুল (সা) বলেছেন মাইয়েতের সঙ্গে তিনটি জিনিস যায় । তার মধ্যে দুটি ফিরে আসে   আর একটি  তার সঙ্গে বাকি থাকে । পরিবার সম্পদ ও আমল তার সাথে যায় । পরিবার ও সম্পদ ফিরে আসে আর তার আমল সঙ্গে  বাকি থেকে যায় ।  একজন মুসলিম অপর জীবিত বা মৃত মুসলিমের জন্যে ততটুকু করতে পারবে  যতটুকু শরিয়তে অনুমতি আছে । যেমন দোয়া করা ,ক্ষমা চাওয়া ,তার পক্ষ থেকে হজ্জ উমরা ও দান খয়রাত করা করা ,মৃতের প্রতি বাকি থেকে যাওয়া ওয়াজিব  রোজা কাযা করে দেওয়া । যেমন নজরের রোজা । আর কুরআন পড়ার জন্য মোল্লা -মুনসি  বা হাফেজ  কারি ভাড়া করে কুরআন খতম দিয়ে তার নেকি মাইয়েতের নামে বখশিয়ে দেয়া বিদয়াত ।

Leave a Comment