ইসলামের ইতিহাসে প্রতিথযশা মহাবীর হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালিদ (রা) মক্কায় কুরাইশ বংশে জন্মগ্রহন করেন । প্রথম জীবনে তিনি অন্যান্য কুরাইশদের ন্যায় ইসলামের একজন ঘোরতর শএু ছিলেন ।অসাধারণ দৈহিক শক্তি ও শৌর্য-বীর্যর জন্য তিনি মক্কায় সুপরিচিত ছিলেন । তার সৈন্য পরিচালনায় ক্ষিপ্রতা ও আক্রমণের তীব্রতায় শএুপক্ষ বেশিক্ষণ সমরক্ষেএ টিকতে পারত না । উহুদের যুদ্ধের সময় তিনি কুরাইশদের পক্ষে যুদ্ধ করেছিলেন । এবং তার অসীম রণচাতুর্যর ফলে মুসলমানগণ বিজয়লাভের মুখে এসেও অবশেষে সাময়িক পরাজয় বরণ করেন । এসময় হতে মহানবি (স) তার অসীম রণচাতুর্র ফলে মুসলমানগণ বিজয়লাভের মুখে এসেও অবশেষে সাময়িক পরাজয় বরণ করেন।অতঃপর ইসলামের সেবাই তার সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেন।অতঃপর ইসলামের সেবায় তার সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেন ।
মহানবী (স) এর সময় ইসলামের খেদমত ঃ তাবুক অভিযানে মহানবি (স) হযরত খালিদকে সিপাহসালার মনোনীত করেন ।এ অভিযানের প্রথম পর্যায়ে মুসলমানগণ ভীষণ প্রতিকূল অবস্থার সম্মুখিন হয় । দ্বিতীয় পর্যায়ে হযরত খালিদ (রা.)শএুব্যুহ ভেদ করে অমিত বিক্রমে যুদ্ধ পরিচালনা করেন এবং শেষ পর্যন্ত বিজয়লাভ করেন । মদিনায় প্রত্যাবর্তন করলে রাসুলুল্লাহ (সা) বিজয়ী খালিদকে সাইফুল্লাহ বা আল্লাহর অসি উপাধিতে ভূষিত করেন ।এরপর তিনি বিনা রক্তপাতে হারিস গোএকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করেন ।মহানবী(স) এর সময় আরও কয়েকটি ক্ষুদ্র যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে সাফল্য অর্জন করেন ।
রিদ্দার যুদ্ধে তার অবদান ঃ হযরত আবুবকর (রা) এর খিলাফতে যে ভন্ডনবি ও স্বধর্মত্যাগিদের বিদ্রোহ সমগ্র উপদ্বিপকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল তা প্রধানত হযরত খালিদের সামরিক তৎপরতায় নির্বাপিত হয় ।হযরত ইকরামা ও হযরত সুরাহবিলের ন্যায় সেনাধ্যক্ষগণ মুসাইলামাকে পর্যুদস্ত করতে ব্যর্থ হলেও হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদ (রা.) সমর্থ হন । এছাড়া তোলাইহা,আসওয়াদ ও সাজাহকে বশীভূত করে তিনি আরবদেশে ইসলাম পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে সহায়তা করেন ।ফন ক্রেমারের মতে খালিদের দুঃসাহসিকতা ও আবুবকরের বিঙ্গতা না থাকলে সেই দিন ইসলামের শএুপক্ষ জয়লাভ করত ।
পারস্য অভিযানে তার ভূমিকাঃ হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালিদ (রা) এর প্রকৃত বীরত্বের প্রকাশ ঘটে পারসিক ও রোমাকদের সাথে সংঘটিত ভয়াবহ যুদ্ধসমুহে ।রিদ্দার যুদ্ধের অনতিকাল পরে হযরত আবু বকর (রা) সেনাপতি হযরত মুসান্নাকে পারসিকদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেন । হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদকে পারস্যে প্রেরণ করেন । হযরত খালিদ (রা) মুসলিম বাহিনীর সেনাপতিত্ব গ্রহন করে উলিসের যুদ্ধে হীরারাজ্য জয় করেন । অতঃপর হযরত আবু বকর (রা) এর নির্দেশে তিনি সিরিয়া গমন করেন ।
রোমানদের সাথে সংঘর্ষে তার ভূমিকা ঃ রোমান সামাজ্যের সিরিয়া অভিযান খালিদ বিন ওয়ালিদের অবিস্মরণীয় কীর্তী। ৬৩৪খ্রি. আজনাদাইনের যুদ্ধে রোমানদেরকে পরাস্ত করে তিনি একে একে দামেস্ক ,জর্দান ,হিমস প্রভূতি অঞ্চল ইসলামী সাম্রাজ্যভুক্ত করেন ।হযরত আবু বকর (রা) এর মৃত্যূর পর হযরত উমর (রা) খিলাফতে অধিষ্ঠিত হয়ে রোমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের গতি আরও জোরদার করেন । ৬৩৬খ্রি. সংঘটিত ইয়ারেমুকের যুদ্ধে তিনি রোমান বাহিনীকে সম্পূর্ণরুপে পরাজিত করেন ।রোমানদের ভাগ্য বিপর্য়ের এটি ছিল চুড়ান্ত পরাজয় । এ যুদ্ধে তিনি যে শোর্য-বীর্য,রণকৌশল ও দুঃসাহকিতার পরিচয় দেন এতে তিনি নিঃসন্দেহে সিজার ,হানিবল ,নেপোলিয়ন ,প্রভৃতি বীর চরিএ সাথে তুলনীয়। সিরিয়া বিজয়ের পর তিনি দামেস্কের শাসনকর্তার পদে নিযুক্ত হন ।
অন্যান্য গুণাবলি ঃ শাসক হিসেবেও তিনি সাফল্যের পরিচয় দেন।তার শাসনব্যবস্থার ফলে নববিজিত সিরিয় অঞ্চলসমুহে শান্তি -শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়। শান্তি ও অশান্তি উভয় ক্ষে েএই তার নিয়ন্ণে ক্ষমতা ছিল অসাধারণ । তবে তুলনামূলকভাবে রণাঙ্গেই ছিল তার প্রকৃত প্রতিভা বিকাশের ক্ষেএ। উহুদের যুদ্ধ হতে শুরু করে জীবনে কোনো যুদ্ধেই তিনি পরাজয় বরণ করেননি । তার মধ্যে মানবিক গুণেরও অভাব ছিল না । সাহিত্য ও গঠনমূলক কার্যর প্রতি তার প্রশংসনীয়-অনুরাগ ছিল।