কোনো মুসাফির ব্যক্তি অথবা শহরের বাইরে অবস্থানকারী এমন ব্যক্তি যার অবস্থান শহর থেকে নূন্যতম পক্ষে এক মাইল বা তার অধিক দূরত্বের চেয়ে বেশি হয় ।অথবা সে পানি পাচ্ছে কিন্তু অসুস্থ, পানি ব্যবহার করলে তার রোগ আরো বৃদ্ধি পাবে এই আশঙ্কা করে অথবা কোনো অপবিএ ব্যক্তি যদি এরুপ আশঙ্কা করে যে ,সে গোসল করলে ঠান্ডাজনিত কারনে তার মৃ ত্যু হবে কিংবা তার অসুস্থতা বৃদ্ধি পাবে ,তাহলে সে মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করবে ।
তায়াম্মুম করার জন্য দুবার হাত মারতে হবে । একবার হাত মারার দ্বারা মুখমন্ডল মাসেহ করবে । আর দ্বিতীয় বার হাত মারার দ্বারা উভয় হাতের কনুই পর্যন্ত মাসেহ করবে ।ফরজ গোসল ও অজু ভঙ্গ হওয়ার ক্ষে এ তায়াম্মুম একই রকম । ইমাম আবু হানিফা ও ইমাম মুহাম্মদ রাদিয়াল্লাহ আনহুমার মতে মাটি জাতীয় যে কোন বস্তু দ্বারা তায়াম্মুম করা বৈধ।যথা মাটি ,বালি ,পাথর ,সুরকি ,চুনা ,সুরমা ইত্যাদি । ইমাম আবু ইউসুফ (র)বলেন ,মাটি ও বালি ব্যতিত তায়াম্মুম বৈধ নয়।
তায়াম্মুমের মধ্যে নিয়ত করা ফরজ ।আর অজুর মধ্যে মুস্তাহাব যে সব কারনে অজু ভঙ্গ হয় সে সব কারনে তায়াম্মুমও ভঙ্গ হয় । পানি ব্যবহারে সক্ষম ব্যক্তি পানি দেখা মাএই তায়াম্মুম ভঙ্গ হয়ে যাবে।পবিএ মাটি ছাড়া তায়াম্মুম বৈধ নয়।যে ব্যক্তি পানি পায় না ,তবে শেষ ওয়াক্তে পানি পাওয়ার আশা রাখে তার জন্য বিলম্বে নামায পড়া মুস্তাহাব ।
সে যদি পানি পাই তাহলে অজু করে নামাজ আদায় করবে।
অন্যথায় তায়াম্মুম করবে এবং সেই তায়াম্মুম দ্বারা ফরজ ও নফল যত ইচ্ছা নামায আদায় করবে ।
যদি নিজ গৃহে অবস্থানকারী সুস্থ ব্যক্তির নিকট জানাজা হাজির হয় এবং যদি সে ব্যতিত অন্য কেউ অভিভাবক হয় আর যদি সে যদি আশঙ্কা করে যে অজু করতে গেলে জানাজা ছুটে যাবে তাহলে সে তায়াম্মুম করে জানাজা নামায পড়বে ।
অনুরুপভাবে কেহ ইদের জামআতে হাজির হয়ে যদি এ আশঙ্কা করে যে অজু করতে গেলে জানাজা ছুটে যাবে তাহলে সে তায়াম্মুম করে জানাজা নামাজ পড়বে । অনুরুপভাবে কেহ ইদের জামআতে হাজির হয়ে যদি আশঙ্কা করে যে ,অজু করতে গেলে নামাজ ছুটে যাবে তার জন্য তায়াম্মুম করে ইদের জামআতে শামিল হওয়া বৈধ।
কোনো ব্যক্তি জুমার নামাজে হাজির হয়ে যদি আশঙ্কা করে যে ,সে যদি অজু করতে গেলে জুমার নামায ছুটে যাবে তথাপি সে অজু করবে ।
সে যদি জুমার নামায পায় তাহলে তা আদায় করবে । নতুন চার রাকাত যোহরের নামায আদায় কাজা আদায় করবে।
কোন ব্যক্তি জুমার নামাযে হাজির হয়ে যদি আশঙ্কা করে যে ,সে অজু করতে গেলে জুমার নামায ছুটে যাবে ।তথাপি সে অজু করবে । সে যদি জুমার নামায পায় তাহলে তা আদায় করবে । নতুন চার রাকাত যোহরের নামায কাযা আদায় করবে । অনুরুপভাবে যদি নামাযের ওয়াক্ত সংকীর্ণ হয় আর সে আশঙ্কা করে যে ,অজু করতে গেলে ওয়াক্ত চলে যাবে ।
তাহলে সে তায়াম্মুম না করেই অজু করে কাজা নামাজ আদায় করবে । মুসাফির যদি তার বাহনে রক্ষিত পানির কথা ভুলে গিয়ে তায়াম্মুম করে নামায অাদায় করবে এবং নামাযের ওয়াক্ত বাকি থাকতেই পানির কথা মনে হয় ,তাহলে ইমাম আবু হানিফা ও মুহাম্মদ (র) মতে নামায পুনরায় আদায় করতে হবে না।
ইমাম আবু ইউসুফ (র) এর মতে অজু করে পুনরায় নামায আদায় করতে হবে।তায়াম্মুমকারীর যদি নিশ্চিত ধারণা না হয় যে ,তার কোনো নিকটবর্তি স্থানে পানি থাকার প্রবল ধারণা হয় তাহলে তার জন্য পানি অনুসন্ধান করা আবশ্যক নয় । যদি ভ্রমণ অবস্থায় কারো সঙ্গির নিকট পানি থাকে তাহলে তায়াম্মুমর পূর্বে তার নিকট পানি চাইবে ।যদি সে না দেয় তবে তায়াম্মুম করে নামায আদায় করবে ।