নারি নির্যাতন আইন

জাহেলী যুগের লোকেরা  সম্পওির লোভে নারীদেরকে জোরপূর্বক বিবাহ করতো অথবা জোর করে তাদের সম্পওির  উওরাধিকারী হয়ে বসতো। সামান্য ঝগড়া বিবাদ হলেই তাদেরকে দেয়া মোহর নিজে আত্মসাৎ করে নিত এবং তাদেরকে  নিছক কষ্ট দেয়ার জন্য তাদের ইচ্ছানুযায়ি অন্যএ বিবাহ করতে বাধা দিত। এ সকল জুলুম-নির্যাতনের অবসান ঘটানোর লক্ষ্যে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন , হে ঈমানদারগণ !তোমরা নারীদেরকে জোরপূর্বক উওরাধিকারী সম্পওি হিসেবে গ্রহণ করবে- এটা তোমাদের জন্য কস্মিনকালেও বৈধ নয়।

তোমরা তাদেরকে যে সম্পদ প্রদান করেছ ,তা হতে কিছু ফিরিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে তাদেরকে অন্যএ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে বাধা প্রদান করো না ।তবে যদি তারা প্রকাশ্যে অশ্লিলতায় লিপ্ত হয়ে যায় ,তাহলে তোমরা তাদেরকে আটকে রাখতে পার। আর সঙ্গির সাথে  উওমরুপে  জীবন যাপন করো ।

যদি তোমরা তাদেরকে কোনো একটি সমস্যার কারনে অপছন্দ কর তবে হতে পারে  তোমাদের অপছন্দনীয় সেই বিষয়টির মধ্যেই রয়েছে তোমাদের  জন্যে  অশেষ কল্যাণ।

জাহেলী যুগে  একটি কুপ্রথা  প্রচলিত ছিল যে,যদি কেউ এক বউকে পরিত্যাগ করে অপর বউ গ্রহণ করতে চাইত, তখন পূর্বের বউয়ের ওপর নানা মিথ্যা অপবাদ আরোপ করত এবং তার ওপর নানাভাবে জুলুম নির্যাতন করত। এতে উদ্দেশ্য থাকত বউকে দেয়া মহর যেন  এই অযুহাতে ফিরিয়ে নেয়া যায়।

এর প্রতিবাদে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন ,সবকিছু উপেক্ষা করেও কেউ যদি এক বউকে পরিত্যাগ করে অন্য বউকে গ্রহণ করতে চাই,তাহলে স্বামী কর্তৃক বউকে দেয়া সম্পদের সামান্য অংশও  সে ফিরিয়ে নিতে পারবে না । আল্লাহর ঘোষণা হলো ,হে স্বামিরা তোমরা কি  অসৎ কর্মের অপবাদ আরোপ করে তাদের থেকে সম্পদ গ্রহণ করবে ?

অথচ এটা সুষ্পষ্ট পাপ।

নারী জাতি আল্লাহ তায়ালার পবিএ আমানত।তাদের প্রতি জুলুম ,অত্যাচার করা নিষিদ্ধ। আলোচ্য আয়াতে এ প্রসঙ্গেই আলোকপাত করা হয়েছে । ইরশাদ হচ্ছে তোমরা পাপাচার ,অন্যায় অবিচার করে  এবং তাদেরকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে কিরুপে ধনসম্পদ ফেরত নিবে ?

অথচ বিবাহের পর তোমরা পরষ্পর সহবাস এবং মেলামেশা  করেছ । এছাড়া তারা তো তোমাদের থেকে সুদৃঢ় প্রতিশ্রুতি  এবং অঙ্গিকার গ্রহণের  মাধ্যমেই আত্বসমর্পণ করেছে।

মহিলার সম্পদ বলপ্রয়োগের পদ্ধতিঃ

বলপ্রয়োগ করে কোনো মহিলার সম্পদের মালিক  হওয়াকে ইসলাম  অবৈধ ঘোষণা করেছে। কিন্তু জাহেলী যুগে লোকেরা জোর করেই মহিলার উওরাধিকারী হয়ে যেত।তাদের বলপ্রয়োগের পদ্ধতি ছিল নিম্নরুপ-

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী মহিলার প্রাপ্য তাকে না দিয়ে নিজে আত্মসাৎ করত।

স্বামি কর্তৃক তাকে অনর্থক উৎপীড়নপূর্বক অর্থের বিনিময়ে তালাক নিতে বাধ্য করতো। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তাকে বিবাহ করার  সুযোগ না দিয়ে গৃহে আবদ্ধ রেখে মৃত্যুর পর তার সম্পওি আত্মসাৎ করত। অথবা তার নির্ধারিত অধিকারের  প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করে নিজের ইচ্ছামতো তাকে  কিছু সম্পদ প্রদান করতো ।

হে ঈমানদারগণ !তোমাদের জন্য এটা বৈধ নয় যে,তোমরা নারীদেরকে জোরপূর্বক উওরাধিকার সূ্ েএ আবদ্ধ করবে । তোমরা তাদেরকে যা কিছু প্রদান করেছ,তার কিছু অংশ নিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে তাদেরকে  অবরুদ্ধ করে  রেখো না : যদি না তারা প্রকাশ্যে ব্যাভিচারে লিপ্ত হয় । আর তোমরা সদ্ভাবে তাদের সাথে জীবনযাপন কর ।যদি তোমরা তাদেরকে অপছন্দ কর ,তবে এমনও হতে পারে যে ,

তোমরা যা কিছু অপছন্দ করছ তাতেই আল্লাহ তায়ালা  অশেষ কল্যাণ রেখেছেন ।  আর যদি তোমরা এক বউয়ের স্থলে  অন্য বউ পরিবর্তন করতে চাও এবং তাদের একজনকে অঢেল সম্পদ প্রদান করে থাক ,তবে তা থেকে কিছুই নিও না । তবে কি তোমরা মিথ্যা অপবাদ আরোপ করে পাপাচার করে তা গ্রহণ করবে?

আর তোমরা তা কিভাবেই গ্রহণ করবে ? অথচ তোমরা  একে অন্যের সাথে  একান্ত আপনজন হয়ে অবাধ মেলামেশা করেছো। অধিকন্তু তারা তোমাদের নিকট থেকে সুদৃঢ় অঙ্গিকার গ্রহণ করেছিল।

Leave a Comment