পারস্য বিজয়

হযরত উমর (রা) এর শাসনকালে কতিপয়  কারনে পারস্যবাসির সাথে মুসলমানদের সংঘর্ষ অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে । এ সংঘর্ষের গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলো নিম্নে বর্ণনা করা হলোঃ

প্রথমতঃ                                                                             মুসলমানদের কোন প্রকার উন্নতি এবং ইসলামের সমৃদ্ধি পারস্যবাসি কোনভাবেই সহ্য করতে পারত না  এবং সর্বপ্রকারে তাদের ধ্বংস সাধনের চেষ্টায় লিপ্ত ছিল ।

দ্বিতীয়তঃ                                                                                মহানবি (স) কর্তৃক প্রেরিত মুসলিম দূতকে  অপমানিত করায় পারস্য সম্রাট দ্বীতিয় খসরু পারভেজ মুসলমানদের বিরাগভাজন হন । এভাবে আন্তজাতিক নীতির অবমাননা করায়  এর প্রতিশোধ ব্যবস্থাস্বরুপ পারস্য বিজয় মুসলমানদের পক্ষে  অপরিহার্য হয়ে পড়ে।

তৃতীয়তঃ                                                                                      রিদ্দা যুদ্ধের সময়  বাহরাইনে যখন বিদ্রোহ সংঘটিত হয় ,তখন পারস্যবাসী বিদ্রোহীদের প্রত্যক্ষভাবে সাহায্য প্রদান করেন । পারস্যবাসীদের বিদ্বেষপূর্ণ ও শএুতামূলক  আচরণের জন্য তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে মুসলমানগণ বাধ্য হন ।  এ হতে বুঝা যায় যে ,খলিফা উমর (রা) সাম্রাজ্যবাদী নীতি দ্বারা পারস্য বিজয়ে উদ্বুদ্ধ হননি,পারস্যবাসীর শএুতা তাকে হাতিয়ারধারনে বাধ্য করেছিল।

চতুর্থতঃ ইরাকের উপর দিয়ে ইউফ্রেটিস ও টাইগ্রিস নদীদ্বয় প্রবাহিত হওয়ার ফলে এটা অত্যন্ত উর্বর  এবং সমৃদ্ধিশালি দেশ হিসেবে পরিগণিত হয় ।  ইরাকের সাথে  আরববাসীদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল ।কিন্ত পারস্যবাসীরা  আরব মুসলিম বণীকদের অব্যাহতভাবে  তাদের দেশে ব্যবসা -বাণিজ্য করতে দিতে রাজি ছিল না । সুতরাং অর্থনৈতিক প্রয়োজনে ও আরবগণ পারস্য বিজয়ে উদ্বুদ্ব হয়েছিল ।

পঞ্চমতঃভৌগোলিক অবস্থানের দিক দিয়ে পারস্য সাম্রাজ্যের ইরাক প্রদেশ ছিল আরব ভূখন্ডের সংলগ্ন । এজন্য আরববাসীর সাথে তাদের প্রায়ই সংঘর্ষ লেগে থাকত ।কাজেই রাজনৈতীক দিক দিয়ে নিরাপওার জন্যই এতদ-অঞ্চলে মুসলমানদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা নেহায়েত  প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল । অধ্যাপক পি.কে হিট্রি বলেন অন্য কোন পূর্ব পরিকল্পনার ছাড়া তৎক্ষণাৎ ঘটিত ঘটনাসমুহের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহওর ইসলামি সাম্রজ্যের সৃষ্টি হয় । এ থেকে  প্রমাণিত হয় যে সাম্রাজ্যবাদী নীতিতে উদ্বুদ্ধ হয়ে আরববাসী মুসলমানগণ কখনও পারস্যদেশ জয় করেনি । পারস্যবাসীদের শএুতা সহ্য করতে না পেরে বাধ্য হয়ে মুসলমানদেরকে হাতিয়ারধারণ করতে হয়েছিল।

ষষ্ঠতঃ অতি প্রাচিনকাল হতে পারস্য-সভ্যতা বিশ্বে সুবিদিত ছিল । সভ্যতার লীলাভুমি মেসোপটেমীয়া ছিল পারস্য সাম্রাজ্যের  একটি প্রদেশ বিশেষ । এছাড়া সমসাময়িক যুগে সমগ্র বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যে হেলেনিক সভ্যতার সুষ্পষ্ট ছাপ  পরিলক্ষিত হত। কাব্যও সংস্কৃতিপ্রিয় আরববাসী এ শিক্ষা  ও সভ্যতার উওরাধীকারী  হতে  আশা পোষণ করত ।

 

Leave a Comment