বদর প্রান্তরে এ যুদ্ধটি সংঘটিত হয়েছে তাই এ যুদ্ধকে গাযওয়াতুল বদর বলা হয় । দ্বিতীয় হিজরির ১৭ রমযান মোতাবেক ৬২৪ সালের ১৪ মার্চ শুক্রবার এ যুদ্ধটি সংঘটিত হয়।
বদর যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার পেছনে অনেকগুলো কারন বিদ্যমান। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণগুলো নিম্নরুপ।
কাফিরদের প্রতিহিংসা ঃ রাসুল (সা) এর নেতৃত্বে মদিনায় ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হওয়ায় কুরাইশদের মনে ক্রোধ ও প্রতিহিংসা সৃষ্টি হয়। মাওলানা মুহাম্মদ আলী বলেন ইসলামের ক্রমবর্ধমান শক্তিকে ধ্বংস করার জন্যেই বদর যুদ্ধ সংঘটিত হয়। বাণিজ্য পথে প্রতিবন্ধকতা ঃ মক্কার ব্যবসায়ীগণ মদিনার পথ ধরে মিসর সিরিয়া প্রভৃতি দেশে ব্যবসা -বাণিজ্য করতো।মদিনায় রাসূল (স) এর আগমনে তাদের এ পথ বন্ধ হয়ে যায়। তাই তারা যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহন করে । নাখলার খন্ড যুদ্ধঃ
রাসুল (স) আবদুল্লাহ ইবনে জাহাশ (রা) এর নেতৃত্বে সদস্যবিশিষ্ট একটি পর্যবেক্ষক দল মক্কায় প্রেরণ করেন । নাখলা নামক স্থানে কুরাইশদের সাথে এক আকষ্মীক সংঘর্ষ হয় । এতে কাফির দলপতি আমর ইবনে হাযরামি নিহত হয় ।ফলে রক্তপণ ও প্রতিশোধ গ্রহনের নিমিওে কুরাইশগণ প্রত্যক্ষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।আবু সুফিয়ানের অপপ্রচারঃ আবু সুফিয়ান যমযম ইবনে আমর গিফারি-এর দ্বারা মক্কায় খবর পৌছে দেন এবং সে মক্কায় পৌছে মিথ্যা প্রচার করে যে ,মুসলমানগণ তাদের ওপর হামলা করেছে। মুনাফিকদের চক্রান্তঃ মুনাফিক চক্র মদিনায় থেকে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছিল। তারা মক্কার কুরাইশদেরকে মদিনা আক্রমণের জন্যে উদ্বুদ্ধ করছিল।
আল্লাহ তায়ালার নির্দেশঃ মদিনায় হিজরতের দ্বিতীয় সালে আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ পেয়েই বদর প্রান্তরে এ যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
ঘটনা প্রবাহ ঃ আবু জাহলের ১০০০সৈন্য নিয়ে সদলবলে আগমনের সংবাদ পেয়ে রাসুল (স) ১২ রমযান ৩১৩ জন সাহাবিকে সঙ্গে নিয়ে মদিনা থেকে ৮০ মাইল দূরে বদর প্রান্তরে উপনীত হন । উভয়পক্ষ মুখোমুখি হওয়ায় এক রক্তক্ষয়ি যুদ্ধ সংঘটিত হয় । এ যুদ্ধে কাফিররা শোচনীয়ভাবে পরাজয় বরণ করে । কেননা মুসলমানদের জন্যে আল্লাহ তায়ালার পরোক্ষ সাহায্য ছিল ।
বদর যুদ্ধের ফলাফলঃ স্বল্প সংখ্যক মুসলমান আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহে বিজয়ী হন ,আর মিথ্যার পূজারী কুফরী শক্তি শোচনীয়ভাবে পরাজীত হয়।
মুসলমানগণ প্রচুর গণিমত লাভ করে। মুসলমানদের সামরিক বিজয় হয় এবং ঈমানী শক্তি বৃদ্ধি পায়। মুসলমানদের ১৪ জন শহিদ হন। কাফিরদের ৭০ জন নিহত এবং ৭০ জন বন্দি হয়। কাফিরদের অন্তরে ভিতির সঞ্চার হয় ।