আল্লাহ তাআলার সৃষ্টিজগতে বেহেশতের হুরি অপ্সরীগণ এক অপূর্ব সৃষ্টি । এরা আল্লাহর প্রিয় বেহেশতীদের জন্য এক অমূল্য নিয়ামত । আল্লাহ তায়ালা পবিএ কুরআনে এদের সম্বন্ধ উল্লেখ করেছেন ,বেহেশতিগণ শ্রেণীবদ্ধভাবে আসমানসমুহের উপর অবস্থান করবে এবং আমি সুলোচনা হুরদের সাথে তাদেরকে পরিণয়সূ ে এ আবদ্ধ করিয়ে দিব । হাদিস শরীফে বর্ণি ত আছে আল্লাহ তায়ালা হুরদিগকে চার রং বিশিষ্ট করে পয়দা করেছেন ।
যথা ঃশুভ্র,সবুজ,হলুদ এবং লাল।জাফরান, মেশক,আম্বর ও কর্পুর দ্বারা হুরদের দেহ নির্মিত। এদের পায়ের অঙ্গুলি হতে উরু পর্যন্ত সুগন্ধি জাফরান দ্বারা উরুহতে স্তনদ্বয় পর্যন্ত মেশক দ্বারা স্তনদ্বয় হতে গ্রীবাদেশ পর্যন্ত আম্বর দ্বারা এবং গ্রীবাদেশ হতে মস্তক পর্যন্ত কর্পুর দ্বারা প্রস্তুত করা হয়েছে । এদের শরীরের রং এত অধীক স্বচ্ছ ও উজ্জল হবে যে , এদের চেহারা বক্ষস্থল ও হাটু প্রভৃতিতে বেহেশতিগণ সুন্দরভাবে নিজেদের অবয়ব দেখতে পারবে । যদি কোন হুর তার হাতের সামান্য অংশও দুনিয়ার দিকে বাড়িয়ে দিত তবে সমগ্র দুনিয়া হাতে আলোকিত হয়ে যেত। যদি কোন হুর তার মুখের সামান্য থুথু দুনিয়ায় নিক্ষেপ করত তবে সমগ্র দুনিয়া মেশক ও আম্বরের সুঘ্রাণে পরিপুর্ণ হয়ে যেত।
বেহেশতের এই হুরদের প্রত্যেকের বক্ষস্থলে স্বর্ণাক্ষরে পবিএ আল্লাহর নাম ও তাদের স্বামীর নাম লেখা আছে । তাদের প্রত্যেকের দুই হাতে দশগাছি করে স্বর্ণকঙ্কন এবং প্রত্যেক অঙ্গুলিতে একটি করে মনি ও মুক্তার অঙ্গুরি আছে । আল্লাহ তায়ালা এদের সম্পর্কে এরশাদ করেছেন যে .‘‘আমি তাদেরকে চির কুমারী করে রেখেছি । তারা মনোমুগ্ধকারিনী ,মনোহরিণি ,সমবয়সী । তাদের রুপ ও সৌন্দর্যের বর্ণনা করতে গিয়ে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেছেন হুরগণ যেন লুকায়িত মুক্তা সদৃশ। নেককারগণ তাদের সৎকাজের পুরষ্কার স্বরুপ তা লাভ করবে । আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক বেহেশতি পুরুষকে তাদের নিজ নিজ বিবি ব্যতিত ও সওরজন করে হুর প্রদান করবেন । তাদের রুপ ও লাবণ্য এত অধিক হবে যে ,সওর পর্দা কাপড়ের মধ্যে হতে বিজলীর ন্যায় তা বিচ্ছুরিত হবে । তাদের চেহারা এত অধিক স্বচ্ছ হবে যে ,তাতে আয়নার কাজ চলে যাবে। আল্লাহ তায়ালা আরো বলেছেন যে বেহেশতিদেরকে তাদের সৎকাজের প্রতিদান স্বরুপ এরুপ হুর প্রদান করা হবে যারা অবনত নয়না এবং যাদেরকে কখনও জীন বা মানব স্পর্শ করে নাই । অর্থ্যাৎ প্রত্যেক হুর এরুপ কুমারি হবে যে ,তৎপুর্বে তারা কোন পুরুষের সংস্পর্শ লাভ করে নাই । এবং তারা কখনও ভিন্ন কোন পুরুষের দিকে ফিরেও তাকায় নাই। এক হাদিসে আছে যে বেহেশতের লুবা নামক হুরকে আল্লাহ তায়ালা মেশক ,আম্বর জাফরান ও কর্পুর দ্বারা পয়দা করেছেন, এবং আবে হায়াত দ্বারা ঐ বস্তুগুলোর খামির করেছেন।। বেহেশতের অন্যান্য যাবতিয় হুর তার প্রতি আসক্ত । সে কোন সমুদ্রে থুথু নিক্ষেপ করলে তার সমস্ত পানি মিষ্টি ও সগন্ধিযুক্ত হয়ে যাবে । ঐ হুরের বুকের উপর স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে ,, যে আমার মত হুরকে পেতে চাই সে যেন সর্বাদা তার প্রতিপালকের ইবাদাতে লিপ্ত থাকে । বেহেশতি হুরদের দেহ এইরুপ স্বচ্ছ যে তাদের চর্ম ও মাংসের ভিতর দিয়ে দেতের অভ্যন্তরস্থ হাড় পর্যন্ত দেখা যাবে।তারা তাদের লজ্জাবনত চক্ষু দ্বারা যখন বেহেশতিদের তাকাবে তখন তারা আনন্দে আত্বহারা হয়ে যাবে । হাদিস শরিফ আছে যে বেহেশতে অনেক বড় বড় ফল আছে বেহেশতিগণ যখন তা ভেঙ্গে ফেলবে তখন তা হতে বিবিধ বস্েএালংকারের সজ্জিতা অপূর্ব রুপসি কুমারি যুবতি একজন হুর বের হয়ে এসে ফল ভঙ্গকারী বেহেশতের সেবাই নিযুক্ত হবে । অন্য হাদিসে আছে যে কোন বেহেশতি যখন বেহেশতের অপরুপ শোভা দর্শন করে অবাক চিওে সেদিকে সওর হাজার বছর পর্য ন্ত নিষ্পলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবে তখন একজন হুর এসে তার কাধের উপর হাত রাখলে সে চমকিত হয়ে এক অতুলনীয়া সুন্দরির সমস্ত শরীর দেখতে পাবে । তার অঙ্গ এমনই উজ্জল হবে যে তার ভিতর দিয়ে বেহেশতি ব্যক্তি নিজের শরীর দেখতে পাবে । হুরটি এসে তাকে সালাম করবে । সে সালামের উওর দিয়ে জিঙ্গেস করবে তুমি কে?হুরটি বলবে আল্লাহ তায়ালা আপনাদেরকে যে হুর প্রদানের ওয়াদা করেছেন আমি তাদেরই একজন। আপনার সেবা ও সন্তুষ্টি বিধানই আমার একমাএ কাজ। রাসুল (স) ইরশাদ করেছেন হুরগণ প্রত্যেকেই নিজ নিজ স্বামিকে সমুধুর কন্ঠে গান গেয়ে শুনাবে। কখনও কখনও তারা সমবেত কন্ঠে সঙ্গিত পরিবেশন করবে । ঐরুপ সুমধুর সুর দুনিয়ার কেউ কোনদিন শ্রবণ করে নাই । তাদের সেই সঙ্গিতের বিষয়বস্তু হবে আমরা চিরস্থায়ী আমাদের কখনও জরা বা মৃত্যু নেই। আমাদের যৌবন কখনও ম্লাণ বা হ্রাসপ্রাপ্ত হবে না । আমরা চিরসন্তুষ্ট ।আমাদের সন্তুষ্টির কখনও অবসান ঘটবে না । গানে বেহেশতের গুনগান এবং নিজেদের গুনগান থাকবে।