যাকাত

সোনা ও রুপার জাকাতের বিধানঃ সোনা ও রুপাতে জাকাত ফরজ হবে যদি নেসাব পরিমাণ ও চন্দ্র বছরের  এক বছর অতিবাহিত হয় । চাই উহা মুদ্রা হোক বা পিন্ড হোক কিংবা গহনা হোক অথবা কাঁচা হোক।

আর যারা স্বর্ণ ও রুপা জমা করে রাখে এবং তা ব্যয় করে না  আল্লাহর পথে ,তাদের কঠোর শাস্তির সুসংবাদ শুনিয়ে দিন । সে দিন জাহান্নামের  আগুনে  তা উওপ্ত করা হবে এবং তার দ্বারা তাদের ললাট ,পার্শ্ব ও  পৃষ্ঠদেশকে দগ্ধ করা হবে ।(সেদিন বলা হবে ) এগুলো  যা তোমরা  নিজেদের জন্যে জমা করে রেখেছিলে ,সুতরাং  এক্ষণে  আস্বাদ গ্রহণ কর  জমা করে রাখার । {সূরা তাওবা ঃ৩৪-৩৫}

আবু সাঈদ খুদরী থেকে বর্ণিত তিনি বলেন নবী বলেছেন পাঁচ আওয়াকের নিচে  জাকাত ফরজ হয় না । পাঁচটি উটের কমে  জাকাত ফরজ হয় না ।

সোনার নেসাবঃ

সোনা বিশ দিনার ও এর  অতিরিক্ত হলে শতকরা  আড়াই ভাগ (২.৫০%) জাকাত ফরজ হবে ।

একটি দিনার (স্বর্ণ মুদ্রা) এক মিছকাল । আর এক মিছকাল বর্তমান যুগের  হিসেবে ৪.২৫ গ্রাম।

বিশ দিনার হবে ৮৫গ্রাম স্বর্ণ,২০*৪.২৫=৮৫ গ্রাম স্বর্ণ।

রুপার নেসাবঃ

রুপা দুই শত ও এর অধিক সংখ্যা দিরহাম হলে বা ওজনে পাঁচ  আওয়াক ও এর বেশি হলে শত করা  আড়াই ভাগ (২.৫০%)জাকাত ফরজ হবে।

🕳ওজন হিসাবে দুই শত ‍দিরহাম ৫৯৫গ্রাম হয় । বর্তমানে ইহা সৌদি রৌপ্য রিয়ালে  ৫৬ রিয়াল ।সৌদি রৌপ্য রিয়াল বর্তমানে ৭টি নোট রিয়াল। তাহলে গুণফল ৫৬*৭=৩৯২ এত দাঁড়াই। আর ইহা হচে্ছ সৌদি নোট রিয়ালের সর্বনিম্ন নেসাব। এর দশ ভাগের একচতুর্থাংশ (৯.৮) রিয়াল ২.৫০% পরিমাণ হয়।

সোনা রুপাকে শিল্পায়ণ করার তিনটি অবস্থাঃ                      যদি শিল্পায়নের  উদ্দেশ্যে ব্যবসা হয়, তবে তাতে ব্যবসা সামগ্রির হিসেবে ২.৫০% জাকাত ফরজ: কারণ তা এখন ব্যবসা সামগ্রি হয়ে গেছে।সুতরাং নিজ দেশের মুদ্রা দ্বারা হিসাব করে জাকাত আদায় করতে হবে।

২.যদি শিল্পায়নের উদ্দেশ্য ব্যবসা হয়,তবে তাতে ব্যবসা সামগ্রির হিসাবে ২.৫০%জাকাত ফরজ :কারণ  তা এখন ব্যবসা সামগ্রি হয়ে গেছে ।সুতরাং নিজ দেশের মুদ্রা দ্বারা হিসাব করে জাকাত আদায় করতে হবে ।

আর যদি শিল্পায়ন দ্বারা উদ্দেশ্য তোহফা -উপহার বানানো হয় ।যেমন ঃহাতের চুরি  ও চামচ  এবং  বদনা  ইত্যাদি বাসন ইত্যাদি বাসন-পাএ । ইহা হারাম ;কিন্ত নেসাব পরিমাণ ও বছর অতিক্রম করবে তখন ২.৫০% জাকাত ফরজ।

মুদ্রাসমুহের জাকাতঃ বর্তমান যুগের মুদ্রাসমুহ যেমন ঃরিয়াল ,ডলার ,টাকা ইত্যাদির বিধান  সোনা -রুপার বিধানের মতই।কিমাত তথা বর্তমান মূল্যের ভিওিতে নির্ধারণ করতে হবে । যখন সোনা বা রুপার নেসাব  পরিমান পৌছবে তখন তাতে জাকাত ফরজ হবে । আর তার পরিমান হচ্ছে ২.৫০%ভাগ যখন বছর অতিবাহিত হবে।

মুদ্রাসমুহের জাকাত বের করার পদ্ধতি ঃ মুদ্রার জাকাত বের করার জন্য সমস্ত সম্পদকে ৪০দ্বারা ভাগ করলে দশ ভাগের এক চতুর্থাংশ দাড়াবে। আর ইহাই সোনা -রোপা ও এর হুকুমে যা আসে তার জাকাত ।মনে করুন এক জনের নিকট আছে রিয়াল (৮০০০০/৪০=২০০০)ইহা হচ্ছে তার ঐ আশি হাজার রিয়ালের জাকাত ।আর ইহা দশ ভাগের এক চতুর্থাংশ ।

ব্যবহারের অলঙ্কারাদির জাকাতের বিধানঃ অপচয় ছাড়া সোনা -রুপা প্রচলিত যে কোন অলংকার নারীদের জন্যে ব্যবহার করা বৈধ। আর প্রতি বছর তাদের প্রতি তার জাকাত আদায় করা ফরজ; যদি নেসাব পর্যন্ত পৌছে এবং তার উপর পূর্ণ হিজরি একটি বছর অতিবাহিত হয়। যে বিধান জানে না সে যখন থেকে জানবে তখন থেকে জাকাত বের করা তার প্রতি জরুরি হবে । আর যে সকল বছর অঙ্গতাবশত ঃগত হয়েগেছে সেগুলোর জাকাত প্রদান করতে হবে না ;কারন শরিয়তের বিধান জানার পরেই জরুরী হয় ।

হীরক ও মুক্তার জাকাত : হীরক ও মুক্তা এবং মূল্যবান পাথর ইত্যাদি যদি ব্যবহারের জন্য হয় তবে তাতে জাকাত নেয় । আর যদি ব্যবসার জন্য হয় তবে তার বিক্রয় মূল সোনা বা রুপার নেসাবের সাথে নির্ধারণ করে যদি নেসাব পরিমাণ হয় এবং তার উপর বছর অতিক্রম করে তবে তাতে দশ ভাগের এক চতুর্থাংশ অর্থাৎ২.৫০%ভাগ জাকাত দিতে হবে ।

নেসাব পূর্ণ করার জন্য সোনাকে রুপার সঙ্গে মিলানো যাবে না ।আর ব্যবসা সামগ্রির বিক্রয় মূল্যে সোনা -রুপার কোন  এটির সঙ্গে মিলানো যাবে।

পশু সম্পদের জাকাত বাহিমাতুল আনয়াম হলো:উট,গরু,দুম্বা-ভেড়া ও ছাগল ।

পশু সম্পদের জাকাতের বিধান :

বাহিমাতুল আনয়ামাহ হলো উট,গরু, দুম্বা-ভেড়া ও ছাগল।

উট ,গরু,দুম্বা-ভেড়া ও ছাগলের  উপর জাকাত ফরজ হবে যখন এগুলো একটি পূর্ণ বছর  বা অধিকাংশ সময় বৈধ মরুভূমি বা খোলা মাঠে কিংবা চারণভূমিতে মুক্তভাবে বিচরণ করবে । যখন নেসাবে  পৌছবে  এবং  এক বছর  অতিবাহিত হবে তখন তাতে জাকাত ফরজ হবে ।চাই  তা দুধের জন্য হোক বা বাচ্চা নেয়ার জনে হোক অথবা  মোটা-তাজা করার জন্যে হোক। প্রতিটি পশুর যে জাতি রয়েছে  জাকাত তার জাতি দ্বারাই বের করতে হবে ।

জাকাত নেওয়ার সময় সর্বোওম বা সর্বনিম্ন পশুটি  নেওয়া যাবে না : বরং মধ্যমটি গ্রহন করতে হবে ।

যখন উট বা গরু কিংবা দুম্বা-ভেড়া ও ছাগল  অথবা অন্য কোন পশুর ও পাখির খাদ্য সরবরাহ করতে হয়। যেমন:পশুর খাদ্য নিজের বাগান থেকে বা ক্রয় করে কিংবা  ব্যবস্থা করে । যদি এগুলো ব্যবসার জন্য করে আর তার উপর  এক বছর অতিবাহিত হয় তবে  বিক্রয় মূল্যে নির্ধারণ করে ২.৫০%ভাগ  জাকাত বের করতে হবে । আর যদি ব্যবসার জন্য না হয় : বরং দুধ বা বাচ্চা দেয়ার জন্য হয়  এবং তার খাদ্যের ব্যবস্থা মালিককে করতে হয় তবে  এতে কোন  জাকাত নেয় ।  মেষ (দুম্বা -ভেড়া)ও ছাগলের সর্বনিম্ন  নেসাব হচ্ছে ৩০ টি । আর উটের সর্বোনিম্ন নেসাব হলো ৫টি।

যদি ১২০ এর অধিক হয় তবে প্রতি ৪০টিতে একটি বিন্তে লাবুন এবং প্রতি ৫০টিতে একটি  হিক্কাহ ।আর ১২১টিতে তিনটি বিন্তে লাবুন  এবং ১৩০ টিতে একটি হিক্কাহ  ও দুটি বিন্তে লাবুন ।আর (১৫০)টিতে তিনটি হিক্কাহ এবং  (১৬০)টিতে চারটি বিন্তে লাবুন ও (১৮০)টিতে দুটি হিক্কাহ ও দুটি  বিন্তে  লাবুন অথবা ৪টি হিক্কাহ।

আর যার প্রতি বিন্তে লাবুন ওয়াজিব হবে কিন্তু তার নিকটে থাকবে না সে বিন্তে মাখাজ বের করবে   এবং পূরন করবে ।পূরণ হচ্ছে (দুটি ছাগল  বা২০ দিরহাম ) অথবা একটি  হিক্কাহ দিবে এবং বেশিটা ক্ষতিপূরণ গ্রহন করবে। আর ক্ষতি পূরণ বা অতিরিক্ত গ্রহণ  শুধুমাএ উটের সঙ্গে নির্দীষ্ট।

পশু সম্পদের যা দ্বারা জাকাত গ্রহণ করা হবেঃ

১.মেষ (দুম্বা-ভেড়া )ছয় মাসের ‘‘য’ ন’’তথা দুম্বা দ্বারা ও এক বছরের ছাগল  ‘‘ছানিয়াহ দ্বারা জাকাত গ্রহণ করা হবে।

পশুর জাকাত মাদী দ্বারা গ্রহণ করা হবে  এবং মাদা দ্বারা গরু ছাড়া আর কিছুতে যথেষ্ট হবে না । আর উটে ইবনে লাবুন অথবা হিক্কা কিংবা জাযাকে বিন্তে মাখাযের স্থলে চলবে ।অথবা যদি নেসাবে সবই মাদা হয় তখন চলবে ।

জাকাত ফরজ হওয়ার ভয়ে বিছিন্ন ও এক িএকরণের বিধানঃ

পশুর জাকাত আদায় না করার উদ্দেশ্যে বিচ্ছিন্নকে এক্ি একরণ ও এক ে্িকে বিছিন্নকে এক  িএকরণ ও এক্ি্েকেরণ বিচ্ছিন্নকরণ চলবে না । অতএব জাকাত আদায়কারী নেসাব না পাওয়ার জন্যে যার নিকট ৪০টি ছাগল আছে দ্বিতিয় জনের নিকট  আছে ৪০টি  ছাগল  আছে দ্বিতিয় জনের নিকট আছে ৪০টি ও তৃতীয় জনের  নিকট আছে ৪০টি । এবার সবগুলো এক েএ করলে  জাকাত আসবে মাএ একটি ছাগল।  আর তিনটি স্থানে করলে আসবে তিনটি ছাগল।  এ ধরনের  হিল্লা -বাহনা করা শরিয়তে নাজায়েজ ।

জাকাত আদায়কারী সর্বোওম মাল গ্রহন করবে না । অতএব গাভিন ,ষাড়,দুধ দিচ্ছে ও ভক্ষণের  জন্যে মোটাতাজা করা হচ্ছে এমন গ্রহন করা যাবে না ।বরং প্রতিটি প্রকারে মধ্যম ধরণের পশু গ্রহণ  করবে ।

Leave a Comment