কুরআনুল কারীমে দু প্রকার ব্যবসার কথা উল্লেখ হয়েছে :মুমিনদের ব্যবসা আর মুনাফিকদের ব্যবসা ঃ
মুমিনদের ব্যবসা লাভজনক যার মাধ্যমে দুনিয়া ও আখেরাতে কল্যাণ সাধিত হয় আর উহা হচ্ছে দ্বীন । যেমন আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন মুমিনগণ ,আমি কি তোমাদের এমন এক ব্যবসার সন্ধান দিব না ,যা তোমাদেরকে কষ্টদায়ক শাস্তি থেকে মুক্তি দিবে ? তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তার রসুলের প্রতি ঈমান আনবে এবং আল্লাহর পথে নিজেদের ধনসম্পদ ও জবিনপণ করে জিহাদ করবে । এটাই তোমাদের জন্যে উওম যদি তোমরা বুঝ। {সূরা ছফঃ১০-১১়়}
মুনাফেকদের ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসা যা দুনিয়া ও আখেরাতে বদনসিবের কারণ ঘটে । যেমন আল্লাহ তায়ালার বানী ঃ আর তারা যখন ঈমানদারদের সাথে মিশে ,তখন বলে আমরা ঈমান এনেছি ।আবার যখন তাদের শয়তানদের সাথে একান্তে সাক্ষাৎ করে ,তখন বলে ,আমরা তোমাদের সাথে রয়েছি -আমরা তো (মুসলিমদের সাথে ) উপহাস করি মাএ । বরং আল্লাহই তাদের সাথে উপহাস করেন । আর তাদরেকে তিনি ছেড়ে দিয়েছেন যেন তারা নিজেদের অহংকার ও কুমতলবে হয়রান ও পেরেশান থাকে । {সূরা বাকারা১৪-১৬} পবিএ কুরআনে এসেছে আল্লাহ তায়ালা ক্রয়বিক্রয়কে হালাল আর সুদকে হারাম করেছেন ।তাই ইসলামি শরিয়তে ক্রয়বিক্রয় হালাল হলেও সবধরনের ক্রয়বিক্রয় হালাল নয় ।এজন্য কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আলোচ্য হাদিসে রাসুল (স) জাহেলী যুগের কতিপয় ক্রয়বিক্রয় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন । প্রখ্যাত হাদিসবিসারদ ইমাম মুসলিম (র) বলেন ,আমার নিকট মুহাম্মদ ইবনে রাফে হাদীস বর্ণনা করেছেন । তিনি বলেন আমার নিকট বর্ণনা করেছেন আবদুর রাজ্জাক । তিনি বলেন আমার নিকট এ হাদিস সম্পর্কে সংবাদ দিয়েছেন ইবনে জুরাইজ । তিনি বলেন আমাকে সংবাদ দিয়েছেন আমর ইবনে দীনার , তিনি বর্ণনা করেছেন আতা ইবনে মীনা থেকে ,তিনি হযরত আবু হোরাইরা (রা) থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন । সর্বাধিক হাদীস বর্ণনাকারী সাহাবী হযরত আবু হোরায়রা (রা)বলেন,রাসূল (স) মুলামাসা ও মুনাবাযা এ দুধরনের ক্রয়বিক্রয়কে নিষেধ করেছেন ।মুরামাসা হচ্ছে কোনরুপ চিন্তাভাবনা না করেই ক্রেতা ও বিক্রেতা পরস্পরের কাপড় স্পর্শ করা । আর মুনাবাযা হচ্ছে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই একে অন্যর প্রতি কাপড় ছুড়ে দেয়া এবং তাদের কেউ একে অপরের নিক্ষিপ্ত কাপড়ের প্রতি লক্ষ্য না রাখা।
🔷এবাদত ও লেনদেনের মধ্যে পার্থক্য:ইসলাম একটি পরিপূর্ন দ্বীন-ধর্ম যা স্রষ্টা ও সৃষ্টির মধ্যকার সম্পর্ককে সুসংহত করে এমন সব এবাদতসমুহের মাধ্যমে যেগুলো আত্মা ও অন্তরকে পরিশুদ্ধ করে ।এমনিভাবে সৃষ্টির মধ্যে পারস্পরিক লেনদেনকে সুষ্টভাবে পরিচালনা করে যেমন বাণিজ্য,বিবাহ ,উওরাধিকার ,দন্ডবিধি ইত্যাদি । এ ছাড়া মানুষ ভাই ভাই হিসাবে নিরাপওা ,ইনসাফ ও ভালবাসার ভেতর দিয়ে বসবাস করতে পারে ।
🔷দ্বিনের সর্ববৃহৎকল্যাণঃ
আসমানি শরিয়তের কল্যাণের মূল তিনটি ঃবিপর্যয়কর জিনিসকে দূরকরণ ।একে জরুরিয়াত তথা জরুরি বিষয় বলে ।
দ্বিতিয় ঃকল্যাণ আমদানি করা ।একে হাজিয়াত তথা প্রয়োজনিয় 🔷 তৃতীয় ঃ
উওম চরি েএর উপর চলা । একে তাহসীনাত তথা সৌন্দর্য বিষয় বলে ।আর জরুরি বিষয়গুলো প্রতিষ্ঠালাভ করবে পাঁচটি জিনিস থেকে বিপর্যায় দূর করার মাধ্যমে । তা হলোঃদ্বীন ,জীবন,বিবেক ,ইজ্জত ,সম্মান ও সম্পদ ।আর কল্যাণ আমদানি সম্ভব প্রয়োজনিয় ও মানুষের মাঝের শরিকানাধীন বিষয়গুলোকে শরিয়তে বৈধকরণে। যাতে করে প্রতিটি ব্যক্তি তার নিজের প্রয়োজন ও অন্যান্যদের থেকে কল্যাণ আমদানি করতে পার যেমন ব্যবসা -বাণিজ্য ও ভাড়া ইত্যাদি । আর উওম চরি েএর প্রতি চলা ভালগুনের কার্যাদি করার দ্বারা সম্ভব যা সুন্দর জীবনকে বৃদ্ধি করে । এ ছাড়া জীবনে বয়ে আনে শান্তি,ভালবাসা ও নিরাপওা ।
চুক্তিপ েএর প্রকার ঃ 🔷 চুক্তিপএ তিন প্রকার ঃ
নিছক বদলার উপর ভিওিশিল যথা ব্যবসা -বাণিজ্য ভাড়া ও কোম্পানি ইত্যৃাদি। শুধুমাএ অনুদানের উপর ভিওিশীল যথা , হেবা -দান,সাদাকা,ধার ,জামানত ইত্যাদি । অনুদান ও বদলা উভয়ের উপর ভিওিশীল যথা ধার লোন এটা এক অর্থে সদকা আবার অপর পক্ষে তা বদলাও বটে কারণঃঅনুরুপ বস্তু দ্বারা তা পরিশোধ করা হয় । 🔷 ব্যবসা -বাণিজ্য ঃ ইহা মালের বদলে মালের আদান -প্রদানের নাম যা মালিকানার উদ্দেশ্যে হয়ে থাকে ।
ব্যবসা ক্ষে েএ মানুষ তিন প্রকার ঃ কিছু মানুষ আছে যারা ইনসাফের সাথে ব্যবসা করে । আর কিছু আছে যারা ব্যবসার সাথে জুলুম করে । আর কিছু আছে যারা ব্যবসায় এহসান করে । অতএব ,যে ব্যবসায়ি ইনসাফের সাথে বিক্রি করবে এবং ইনসাফের সাথে মূল্য গ্রহণ করবে সে না জুলুম করবে আর না কেউ তার প্রতি জুলুম করবে ইহা জায়েজ । আর যে জুলুম ও অন্যায়ভাবে বিক্রি করবে যেমন ,ধোকাবাজি ,মিথ্যাও সুদ ইত্যাদি ইহা হারাম । আর যে ইহসানের সাথে বিক্রি করবে ,কেনাবেচায় উদার হবে,পরিশোধের সময় দেবে ,ওয়াদা পূরণে জলদি করবে এবং মূল্য বৃদ্ধি করে না। ইহা সর্বোওম প্রকার ।
আল্লাহ ন্যায়পরায়ণতা ,সদাচারণ এবং আত্মীয়-স্বজনকে দান করার আদেশ দেন । হস্তান্তরের দিক থেকে চুক্তি চার প্রকার ঃ দেওয়া ও নেওয়া নগদে যেমন ঃনগদে যেমন একটি বই দশ টাকাতে বিক্রি করা ইহা জায়েজ । দেওয়া ও নেওয়া নগদে যেমন ঃনগদে একটি বই দশ টাকাতে বিক্রি করা ,ইহা জায়েজ। দেওয়া ও নেওয়া উভয়টি বাকিতে যেমন ঃনির্দিষ্ট গুণের একটি অমুক গাড়ি এক বছর পরে দশ লক্ষ টাকা মূলে বিক্রেতা হস্তান্তরের করবে যার মূল্য ক্রেতা পরিশোধ করবে এক বছর পর । এ ব্যবসা অবৈধ ঃকারণ ইহা বাকি দ্বারা বাকি বিক্রি যা শরিয়ত জায়েজ নেই । মূল্য নগদে পরিশোধ এবং পণ্য বাকিতে ,একে সালাম ব্যবসা বলে , ইহা জায়েজ । মূল্য নগদে পরিশোধ এবং পণ্য বাকিতে , একে সালাম ব্যবসা বলে ,ইহা জায়েজ । পণ্য নগদে এবং মূল্য পরিশোধ বাকিতে যেমন ঃএক লক্ষ টাকায় একটি গাড়ি বিক্রি করা যার মূল্য পরিশোধ করবে এক বছর পরে ।ইহা জায়েজ । 🔷সালাম হচ্ছেঃ
চুক্তির বৈঠকে মূল্য পরিশোধের বিনিময়ে নির্দিষ্ট গুণাগুণের পণ্য জিম্মায় প্রতিশ্রুতি সাপেক্ষে বাকিতে বিক্রি করা । আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের সুবিধা ও প্রয়োজনে মিটানোর জন্য এটি বৈধ করেছেন । একে ‘‘সালাফ’’বলে আখ্যায়িত করা হয় । বলাতে ইহা এমন ব্যবসা যা মূল্য অগ্রিম প্রদান করা হয় এবং পণ্য পরবর্তি বিনিময় করা হয় ।
🔷সালাম এর বিধানঃ এটি বৈধ এর উদাহরণ হচ্ছে ঃযেমন কাউকে একশত টাকা এই শর্তে প্রদান করা যে ,এক বছর পরে সে অমুক প্রকৃতির পঞ্চাশ কিলো খেজুর প্রদান করবে । ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত তিনি বলেন যে ,রাসুল (সা) বলেছেন যে ব্যক্তি কোন ব্যপারে অগ্রিম সন্ধি ভিওিক ব্যবসা করবে তা যেন মাপে,ওযনে ,ও মেয়াদে জানা-শুনা হয় ।
সালাম ব্যবসার শর্তাবলি ঃ একে নিয়ন্ এণ করার উদ্দেশ্যে ব্যবসার শর্তাবলি ছাড়াও আরো কিছু শর্তারোপ করা হয় । যেমন সালামকৃত পণ্য ও মুল্যের নলেজ থাকা এবং চুক্তি বৈঠকে মূল্য হাতে গ্রহণ ।এ ছাড়া যার চুক্তি হচ্ছে তা জিম্মায় থাকবে এবং এমন ভাবে পরিচিত করা যার কিছুই অজানা থাকবে না । এর মাঝে মেয়াদ ও বিনিময় স্থানসহ উল্লেখ থাকবে ।