সুরা আল মুমিনুন

এই আয়াতে  আকাশ থেকে  বারিবর্ষণের  আলোচনার  সাথে কথাটি  যুক্ত করে ইঙ্গিত করা হয়েছে  যে ,মানুষ সৃষ্টিগতভাবে খুবই দুর্বল । ফলে যেসব জিনিস তার জীবনের জন্য অপরিহার্য,সেগুলো নির্ধারিত পরিমাণের বেশি হয়ে গেলে  তার জন্য বিশেষ ক্ষতিকর এমনকি আযাব হয়ে যায় । যে পানির  অপর নাম জীবন  সেই  পানি প্রয়োজনের চাইতে বেশি বর্ষিত  হয়ে গেলে  প্লাবন এসে যায় এবং মানুষ ও তার জীবন -জীবিকার জন্য বিপদ ও আযাব হয়ে পড়ে । তাই আকাশ থেকে বারিবর্ষনও পরিমিতভাবে হয় ,যা মানুষের অভাব দূর করে দেয়  এবং সর্বনাশের কারণ  হয় না । তবে যেসব ক্ষে েএ আল্লাহ তাআলা কোন কারনে  প্লাবনে -তুফান চাপিয়ে দেয়ার  ইচ্ছা করেন ,সেসব ক্ষেএ ভিন্ন।

অতঃপর আরবের  মেজায ও রুচি  অনুযায়ী  এমন কিছুসংখ্যক  বস্তুর  কথা উল্লেখ করা হয়েছে  ,অর্থাৎ যেগুলো  পানি দ্বারা উৎপন্ন । বলা হয়েছে ,খেজুর  ও আঙুলের  বাগান  পানি  সেচের দ্বারাই সৃষ্টি করা হয়েছে ।

বাক্য  অন্যান্য  ফলের কথাও  আলোচনা করা হয়েছে , যেগুলো  পানি দ্বারা উৎপন্ন। বলা হয়েছে খেজুর  ও আঙ্গুরের বাগান পানি সেচের  দ্বারাই  সৃষ্টি করা হয়েছে ।

বাক্য অন্যান্য  ফলের কথাও আলোচনা করা হয়েছে , অর্থাৎ এসব  বাগানে  তোমাদের জন্য  খেজুর ও  আঙুর ছাড়া হাজারো  প্রকারের  ফল সৃষ্টি করেছি ।  এগুলো  তোমরা শুধু মুখরোচক হিসেবে ও খাও  এবং কোন কোন  ফল গোলজাত করে খাদ্য হিসেবে  ভক্ষণ কর।

এরপর  বিশেষ করে যয়তুন  ও তার তৈল  সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে ।কেননা  এর উপকারিতা  অপরিসিম যয়তুনের বৃক্ষ তূর পর্বতে উৎপন্ন হয় বিধায়  এর দিকে  সমৃদ্ধ করা হয়েছে । বলা হয়েছে  সায়না  ও সিনিন  সেই  স্থানের  নাম ,যেখানে তূর পর্বত  অবস্থিত । যয়তুনের  তৈল  মালিশ  ও বাতি  জ্বালানোর  কাজেও  আসে  এবং ব্যন্জনেরও কাজে দেয় । তাই বলা হয়েছে।        যয়তুনের বৃক্ষের জন্য বিশেষত তুর  পর্বতের উল্লেখ করার কারণ  এই যে , এই বৃক্ষ সর্বপ্রথম তূর পর্বতেই উৎপন্ন হয়েছিল । কেউ কেউ বলেন ঃতুফানে -নূহের  পর পৃথিবীতে সর্বপ্রথম  যে বৃক্ষ  উৎপন্ন হয়েছিল । তা ছিল যয়তুন ।(মাযহারি)

এরপর আল্লাহ তাআলা  এমন নেয়ামতের কথা উল্লেখ  করেছেন ,যা জানোয়ার  ও চতুষ্পদ জন্তুদের মাধ্যমে  মানুষকে দান করেছে , যাতে মানুষ  শিক্ষা গ্রহন করে  এবং  আল্লাহর অপার  শক্তি ও অপরিসিম  রহমতের কথা স্মরণ করে তওহীদ ও এবাদতের মশগুল হয় । বলা হয়েছেঃ অর্থ্যাৎ তোমাদের জন্য চতুষ্পদ জন্তুদের  মাধ্যমে  মানুষকে দান করেছে  যাতে মানুষ  শিক্ষা  গ্রহন করে  এবং  আল্লাহ  তাআলার  অপার  শক্তি ও অপরিসিম  রহমতের কথা স্মরণ করে তওহীদ  ও এবাদতে মশগুল হয় । বলা হয়েছে ঃ

অর্থাৎ তোমাদের জন্য  চতুষ্পদ  জন্তুদের মধ্যে  শিক্ষা ও উপদেশ  রয়েছে ।  অতঃপর এর কিছু  বিবরণ  এভাবে দেয়া হয়েছে । অর্থাৎ এসব জন্তর পেটে আমি তোমাদের জন্য  পাক – সাফ দুধ তৈরি করেছি ।  যা মানুষের উৎকৃষ্ট খাদ্য ।

এরপর বলা হয়েছে  শুধু দুধই নয় , এসব  জন্তর মধ্যে তোমাদের জন্য  অনেক উপকারিতা রয়েছে ।  চিন্তা করলে দেখা যায়  জন্তুদের  দেহের প্রতিটি অংশ  প্রতিটি লোম মানুষের কাজে  আসে  এবং  তার দ্বারা মানুষের  জবিনধারনের  অসংখ্য  প্রকার সরন্জাম  তৈরি হয় ।

জন্তুদের পশম ,অস্থি, অন্‌ েএ এবং  মানুষ জবিকার কত যে  সাজ – সরন্জাম তৈরি করে  তা গণনা করাও কঠিন । িএসব উপকার  ছাড়া  আরও  একটি  উপকার এই যে হালাল  জন্তদের মাংসও  মানুষের সর্বৎকৃষ্ট খাদ্য।

পরিশেষে  জন্তু জানোয়ারদের আরও  একটি  মহা উপকারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে  যে  তোমরা তাদের পিঠে  আরোহণও কর  এবং মাল  পরিবহনের  কাজেও নিযুক্ত কর।  এই শেষ  উপকারের মধ্যে  জন্তুদের  সাথে নদিতে চলাচলকারী  নৌকায় আরোহণ করে এবং মালপএ  একস্থান তেকে অন্য স্থানে  নিয়ে যায় । তাই এর সাথে নৌকার কথাও  আলোচনা করা হয়েছে ।  চাকার মাধ্যমে চলে  এমন সব  যানবাহনও  নৌকার হুকুম রাখে ।

Leave a Comment