সুরা নিসা অনুবাদ

তাফসীরে রুহুল মায়ানীতে হযরত ছালাবি  ইবনে  আবি হাতেম ও হযরত আব্দুল্লাহ  ইবনে  আব্বাস  (রা) এর রেওয়ায়েতক্রমে  বর্ণিত আছে  যে  বিশর নামক এক মুনাফিক ছিল । কোন এক  ইহুদির সাথে  তার  ঝগড়া বেধে যায় ।ইহুদি লোকটি বলল চল আমরা মুহাম্মদ (সা)  এর  নিকট  গিয়ে  আমাদের  মধ্যকার  ঝগড়ার মিমাংসা করে নেই ।  কিন্তু মুনাফিক  বিশর  এ প্রস্তাবে  রাজি হলো না : বরং সে কাব ইবনে  আশরাফ  নামক ইহুদির  নিকট  গিয়ে মিমাংসা করার ব্যপারে প্রস্তাব পেশ করল। যা হোক  এতদুভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটির পর মহানবি (সাঃ) এর নিকট  উপস্থিত হয়ে নিজেদের বিষয়  তারই মাধ্যমে  মীমাংসা করার  ব্যপারে  সিদ্ধান্ত হয় ।

অতঃপর মহানবি (স) মকদ্দমার বিষয় অনুসন্ধান করলেন । তাতে ইহুদির অধিকার  প্রমাণিত হয়  এবং তিনি তারই পক্ষে  ফায়সালা করে দিলেন । এতে মুনাফিক  সেই মীমাংসা মেনে  নিতে  অসম্মত হয় এবং দ্বিতীয়বার  বিচারের জন্য  হযরত ওমরের নিকট যেতে  ইহুদিকে  বাধ্য করে । পরে  ইহুদি  হযরত  ওমরের  নিকট যেতে রাজি হয় । অতঃপর তারা দুজনই  হযরত ওমর ফারুক (রা)  এর নিকট  হাযির হলো । ইহুদি লোকটি  হযরত ওমরের  নিকট  সমগ্র  ঘটনা  বিবৃত  করার পর  বলল  যে  এ মকদ্দমার ফয়সালা  মহানবি  (স) ও করেছেন । কিন্তু তাতে এ লোকটি  সন্তুষ্টি  নয় , ফলে আপনার  নিকট  এসেছি । হযরত ওমর বিশরকে জিঙ্গেস করলেন  ঘটনাটি কি তাই ?

সে বলল জী হ্যাঁ। তখন  হযরত ওমর (রা)   বললেন , তাহলে  একটু  অপেক্ষা কর , আমি এখনই  আসছি ।  একথা বলে  তিনি ঘরের  ভেতর  থেকে  একটি  তলোয়ার নিয়ে  এলেন  এবং মুনাফিক  লোকটিকে  হত্যা করে ফেললেন । তিনি বললেন , যে লোক রাসুল (স)  এর  ফয়সালা  মেনে নিতে রাজি হয় না , এ হলো  তার মিমাংসা  । এ ঘটনাকে কেন্দ্র  করেই আলোচ্য  আয়াতটি  অবতীর্ণ হয় ।  উল্লেখ্য  ঐ দিনই মহানবি  (স) হযরত ওমরকে ফারুক উপাধিতে ভূষিত করেন ।

যাবতীয় বিচার  মীমাংসার  জন্য  আল্লাহ ও তার রাসুলের  বিধানের  দ্বারস্থ হতে  হবে । তাগুত  তথা  বাতিল  মতাবলাম্বিদের  অনুসরণ করা যাবে না ।  এ নির্দেশ  প্রদান করে  আল্লাহ  তায়ালা ইরশাদ করেন  , হে  মুহাম্মদ (স) আপনি  কি  ঐসব  মুনাফিকদের  প্রতি লক্ষ্য করেননি যারা ধারনা  করে যে , আপনার  প্রতি  যে  মহাগ্রন্থ  আল কুরআন  অবতীর্ণ হয়েছে  এবং  আপনার  পূর্বে  যেসব  আসমানি  কিতাব  অবতীর্ণ হয়েছিল ,তারা সবগুলোর  প্রতি  যে  ঈমান আনয়ন করেছে  ।  অথচ তারা  যখন কোনো বিষয়ের  মামলা মকদ্দমা পেশ করতে ইচ্ছা করে  তখন দৌড়ে  তাগুতের কাছে চলে যায় । অর্থ াৎ মানুষরুপি শয়তানদেরকে  অস্বীকার করার  ব্যাপারে  তাদেরকে  কঠোর  নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে । তারা জানে  না যে শয়তান তাদেরকে সত্যপথ  থেকে  অনেক দুরে  নিয়ে যেতে চায়।

মুনাফিকরা ইসলাম  ও মুসলামনদের চরম দুশমন ।  তারা মুখে  ঈমানের বুলি  আওড়ালেও  অন্তরে নেফাকী লালন করত । তাদের  একটি  চরিএ  আলোচ্য  আয়াতে  ইরশাদ হচ্ছে এভাবে – আর  যখন  ঐ মুনাফিকদেরকে  বলা হয় , তোমরা  আল্লাহ কর্তৃক  অবতারিত মহাগ্রন্থ আল কুরআন  এবং  তারই  বন্ধু মুহাম্মদ(স)  এর দিকে  তোমাদের  সকল সমস্যার সমাধানের  নিমিও  আস। তখন  হে নবি ! আপনি মুনাফিকদেরকে  দেখবেন , তারা  আপনার  নিকট থেকে বিমুখ হয়ে  বহুদুরে চলে গেছে । তারা ঘুষ প্রদানের মাধ্যমে বাতিল  বিচারকদেরকে  বশ করে বিচারকার্য সম্পন্ন  করছে ।

1 thought on “সুরা নিসা অনুবাদ”

Leave a Comment