সূরা আত তূরের তাফসীরের আলোচনা

সূরা আত তূরে মহান আল্লাহ পাক বলেন,আমি জিন ও ইনসানকে ইবাদাত ব্যতিত  অন্য কোন কাজের জন্য সৃষ্টি করিনি। এখানে  বাহ্যদৃষ্টিতে দুটি প্রশ্ন দেখা যায়+যাকে আল্লাহ তায়ালা বিশেষ কাজের জন্য সৃষ্টি করেছেন তার জন্য সেই কাজ থেকে  বিরত থাকা  যুক্তিসঙ্গতভাবে বিরত থাকা অসম্ভব,অপ্রকৃত। কেননা আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছা ও অভিপ্রায়ের  বিপরিতে কোন কাজ করা অসম্ভব।                                                            আলোচ্য আয়াতে জীন ও মানব জাতীকে কেবল  এবাদতে সিমাবদ্ধ করে দেয়া হয়েছে।অথচ তাদের সৃষ্টিতে এবাদত ব্যতিত আরও অনেক উপকারিতা ও রহস্য বিদ্যমান আছে। প্রথম প্রশ্নের জবাবে কোন কোন তাফসীরবীদ বলেন যে এর বিষয়বস্তু কেবল মুমিনদের সাথে সম্পৃক্ত।অর্থাৎ আমি মুমিন জিন ও মানবকে আমার এবাদত ব্যতিত অন্য কোন কাজের জন্য সৃষ্টি করিনি । বলাবাহুল্য যারা মুমিন তারা কমবেশি এবাদত করে থাকে । মহান আল্লাহ পাক বলেন ,

আমি তাদেরকে কেবল এজন্য সৃষ্টি করেছি,যাতে তাদেরকে কেবল এবাদত করার আদেশ দেয়।আল্লাহর আদেশকে  মানুষের ইচ্ছার সাথে শর্ত যুক্ত রাখা হয়েছে ।তাই আদেশের বিপরিত হওয়া অসম্ভব নয়।আল্লাহ সবাইকে ইবাদত করার আদেশ দিয়েছেন ,কিন্ত সাথে সাথে  ইচ্ছা -অনিচ্ছার ক্ষমতাও  দিযেছেন ।তাই কোন কোন লোক খোদাপ্রদও ইচ্ছা  যথার্থ ব্যয় করে  এবাদতে আত্বনিয়োগ করছে ,এবং কেউ কেউ এই ইচ্ছার অসদ্ব্যবহার করে এবাদত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। জিন ও মানবকে সৃষ্টি করার সময় তাদের মধ্যে এবাদত  করার যোগ্যতা ও প্রতিভা নিহিত করা হয়েছে।

প্রত্যেক জিন ও মানবের মধ্যে এই প্রতিভা প্রকৃতিগতভাবে বিদ্যমান থাকে ।এরপর কেও এই প্রতিভাকে সঠিকপথে ব্যয় করে কৃতকার্য হয় এবং কেউ একে গোনাহ ও কুপ্রবৃওিতে বিনষ্ট করে দেয়।

প্রত্যেক সন্তান প্রকৃতির উপর জন্মগ্রহন করে এরপর তার পিতা-মাতা তাকে প্রকৃতি থেকে সরিয়ে নিয়ে ইহুদিঅথবা অগ্নিপূজারিতে পরিণত করে ।প্রকৃতির  উপর জন্মগ্রহন করার অর্থঅধিকাংশ আলেমের মতে ইসলাম ধর্মের  উপর জন্মগ্রহন করা ।অতএব  এই হাদিসে বলা হয়েছে যে প্রতি মানুষের মধ্যে প্রকৃতিগত ওসৃষ্টিগতভাবে ইসলাম ও ঈমানের যোগ্যতা ও প্রতিভা নিহিত করা হয়েছে । এরপর তার পিতামাতা  এই প্রতিভাকে বিনষ্ট করে কুফরের পথে পরিচালিত করে ।

এই হাদিসের অনুরুপ  আলোচ্য আয়াতেরও এরুপ অর্থ হতে পারে যে ,প্রত্যেক জিন ও  মানবের মধ্যে  আল্লাহ তায়লা  এবাদত করার যোগ্যতা  ও প্রতিভা রেখেছেন। আমি জিন ও মানবকে সৃষ্টি করে  সাধারন মানুষের  অভ্যাস অনুযায়ি কোন উপকার চায় না যে ,তারা রিযিক সৃষ্টি করবে  আমার জন্য অথবা নিজেদের জন্য  অথবা আমার অন্যান্য সৃষ্ট  জীবের জন্যে । আমি এটাও চায় না যে ,তারা আমাকে আহার্য্য যোগাবে ।

মানুষের সাধারণ অভ্যাস অনুযায়ি কোন উপকার চায় না যে,তারা রিযিক সৃষ্টি করবে আমার জন্য  অথবা নিজেদের জন্য অথবা আমার অন্যান্য সৃষ্টজীবের জন্য। আমি এটাও চায় না যে তারা আমাকে আহার্য যোগাবে ।

মানুষের সাধারণ  অভ্যাস অনুযায়ি  ্এই কথাগুলো বলা হয়েছে।                 কেননা যত বড়লোকই হোক না কেন কেউ যদি কোন গোলাম ক্রয় করে ,এ্বং তার পেছনে অর্থ কড়ি ব্যয় করে তবে তার অর্থ এটাই  থাকে যে গোলাম তার কাজকর্মর প্রয়োজন মিটাবে  এবং রুযি রোযগার করে মালিকের হাতে সমর্পন করবে । আল্লাহ তাআলা এসব  উদ্দেশ্য থেকে পবিএ ও উদ্ধে।তাই বলেছেন যে  জীন ও মানবকে সৃষ্টী করার পশ্চাতে আমার কোন  উপকার উদ্দেম্য নই।

জনগনের সুবিধার্থ জনপদের সাধারণ কুয়াগেুলোতে পানি তোলার পালা নির্ধারণ করা হয় ।। প্রত্যেকেই নিজ নিজ পালা অনুযায়ী পানি তোলে ।

উদ্দেশ্য এই যে  পূর্ববতী উম্মতদেরকে নিজ নিজ সময়ে আমল করার সুযোগ ও পালা দেওয়া হয়েছে ।যারা নিজেদের পালায় কাজ করেনি তারা ধ্বংস হয়েছে। এমনিভাবে বর্তমান মুশরিকদের পালা  ও সময় নির্ধারিত আছে। যদি তারা এই সময়ের মধ্যে কুফর থেকে বিরত না হয় , তবে আল্লাহর আযাব তাদেরকে দুনিয়াতে না হয় পরকালে অবশ্যই পাকড়াও  করবে । তাই তাদেরকে বলে দিন ,তারা যেন ত্বরিত আযাব চাওয়া থেকে বিরত থাকে ।অর্থাৎ কাফেররা  অস্বীকারের ভঙ্গিতে বলে থাকে যে ,

আমরা বাস্তবিক অপরাধী হলে আপনার কথা অনুযায়ী আমাদের উপর আযাব আসে না কেন?

এর জওয়াব এই যে ,আযাব নির্দীষ্ট সময় ও পালা অনুযায়ি আগমন করবে ।তোমাদের পালাও এল বলে ।কাজেই তাড়াহুড়া করো না

Leave a Comment