তাফসীরে ইবনে কাসীরে বলা হয়েছে প্রাক ইসলামি যুগে এ নিয়ম প্রচলিত ছিল যে , বউ উওরাধিকার সূ েএ অথবা পিএালয় থেকে উপঢোকনস্বরুপ যেসব অর্থসম্পদ লাভ করত ,স্বামিরা তা আত্মসাৎ করে ফেলত । আবার মাঝে মাঝে বঊয়ের কোনো দোষ না থাকা সত্বেও শুধু স্বভাবগতভাবে স্বামি তাকে অপছন্দ করত এবং বউয়ের প্রাপ্য প্রদান করত না । অপরপক্ষে তালাক দিয়ে তাকে মুক্ত ও করত না ,যাতে সে অতিষ্ট হয়ে অলংকার ও মহর বাবদ প্রদও টাকা ফেরত দেয় কিংবা অপ্রদও মহর ক্ষমা করে দেয় । সুতরাং এসব নির্যাতনের মূলোৎপাটন করে আল্লাহ তায়ালা আয়াত অবতীর্ণ করেন ।
প্রাক ইসলামি যুগে এ প্রথা ও প্রচলিত ছিল যে যদি কেউ প্রথম বউকে বর্জন করে তদস্থলে দ্বিতীয় বউকে গ্রহণ করতে চাইত ,তখন তারা প্রথম বউয়ের ওপর মিথ্যা অপবাদ দিত এবং নানাভাবে কষ্ট দিত । যাতে সে মহর ফেরত দিয়ে চলে যেতে বাধ্য হয়। তাদের এরুপ আচরণের প্রতিবাদ করে আল্লাহ তায়ালা আয়াত নাযিল করেন ।
আরবিতে জাওজ একটি দ্বৈত অর্থবোধক শব্দ ।এর দ্বারা স্বামী বউ দুজনকেই বোঝায় । আবার এর অর্থ জোড়াও হয় । তা ছাড়া শ্রেণী ,সাথি সঙ্গি অর্থেও শব্দটি ব্যবহার হয়ে থাকে ।
আল্লামা রাগেব ইস্পাহানি (র) বলেন পরিভাষায় জাওজ বলা হয় তাই এটা স্বামি বউ উভয় অর্থে ব্যবহার হয় ।জাওজ দ্বারা হযরত আদম (আ) এর পত্নি হযরত হাওয়া কে উদ্দেশ্যে করা হয়েছে । কেননা আদম (আ) এর বাম পাজরের হাড় থেকেই তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে । হাওয়া (আ) কে আদম (আ) এর সঙ্গি করা হয়েছে ।
এতিমদের অধিকার আদায়ে গুরুত্বারোপের কারণ : ইসলাম সর্বজনিন কল্যানকামী ও শাশ্বত জীবনবিধান । সমাজের সর্বপ্রকার মানুষের অধিকার আদায়ের ক্ষে েএ ইসলাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে । যে যুগে মানবাধিকারের কোনো বালাই ছিল না ।সে যুগেও ইসলাম এতিমদের অধিকারের ব্যাপারে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করেছে তাদের অধিকার আদায়ের প্রশ্নে দ্ব্যর্থহীনভাবে তাগিদ দিয়েছে।
এভাবে এতিমদের অধিকার আদায়ে গুরুত্বারোপের কারণ হচ্ছে- জাহেলি যুগে সমাজে এতিমদের কোন অধিকার স্বীকৃত ছিল না । তাদের ধনসম্পদ ইজ্জত আবরু রক্ষণাবেক্ষণের প্রতি কেউ গুরুত্ব দিত না ।
তাদের দায়িত্বভার গ্রহণ করা হতো না । অভিভাবকগণ তাদের ধনসম্পদ আত্বসাৎ করত । যথাসময়ে তাদের ধনসম্পদ ফেরত দিতে চাইত না । জোরপূর্বক তাদের ধনসম্পদ ভোগ ব্যবহার ও অপচয় করত । এতিমদের উৎকৃষ্ট মালের পরিবর্তে নিজেদের নিকৃষ্ট মাল ফেরত দিত। এতিমদের প্রতিপালন ও শিক্ষাদীক্ষার ব্যবস্থা ঠিকমতো করত না ।
সর্বোপরি তাদের ধনসম্পদ গ্রাস করার মানসে এতিম কন্যাদের বিয়ে করত এবং কষ্ট দিত । সুতরাং এসব কারনে স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা উল্লিখিত আয়াতে অসহায় এতিমদের অধিকার আদায়ে সরাসরি নির্দেশ প্রদান করেছেন।