সূরা আল আরাফ

কুরআন মজীদের যে সব জায়গায়  আদম ও হাওয়া (আ)-র জান্নাত থেকে বহিস্কৃত হওয়ার কথা  উল্লেখ করা হয়েছে ,সে সব জায়গায়ই এ কথা বলা হয়েছে ।  এ কারনে এখানেও এ সম্পর্কের দিক দিয়েই  তার উল্লেখ করা হয়েছে । অর্থাৎ মানব বংশ  ও মানব জাতির জীবন ও আয়ু শুরু হওয়ার সময়েই  এ কথা সুস্পষ্ট বুঝিয়ে  দেওয়া হয়েছিল।

অর্থাৎ দুনিয়ায় যতদিন তাদের আয়ুষ্কাল নির্দীষ্ট রয়েছে ,ততদিন তারা এখানে থাকবে আর বাহ্যত ভালো বা মন্দ যে ধরনের জীবনই  অতিবাহিত করা তাদের ভাগ্যে রয়েছে  তা যাপন করবে ।

দুনিয়ায় যে লোকই অন্যায়ভাবে নিহত হয় ,তার এ অন্যায় রক্তপাতের একটা অঙ্গ আদমের সে প্রথম পু্ েএর  আমলনামায় লেখা হয় ,যে তার ভাইকে হত্যা করেছিল । কেননা নরহত্যার পথ সে-ই  সর্বপ্রথম উম্মুক্ত করেছিল ।  এ থেকে জানা গেল যে ,যে ব্যক্তি বা জনসমষ্টি কোনো ভুল মতাদর্শ  কিংবা ভুল আচরনের  ভিওি স্থাপন করে ,সে কেবল  নিজের কৃতকর্মের জন্যই দায়ী হবে না :বরং দুনিয়ায় যত মানুষ তার প্রভাবে পড়বে ও তার দ্বারা  অনুপ্রেরণা লাভ করবে  তাদের সকলের গুনাহের দায়িত্বের একটি অঙ্গ তার আমলনামায় লেখা হবে । আর যতদিন পর্যন্ত তার েএ ভুল কাজের ক্রিয়া   প্রতিক্রিয়া চলতে থাকবে ,ততদিন পর্যন্ত তার নামেও  এটি সংযোজিত হতে থাকবে । এ থেকে এ কথাও জানা গেল যে ,প্রতিটি ব্যক্তি স্বীয়  পাপ কিংবা পুণ্য কাজের প্রভাব -প্রতিক্রিয়া  অপর লোকদের জীবনে কিরুপ প্রতিফলিত হয় ,সেজন্যও তাকে জবাবদিহি করতে হবে । দৃষ্টান্তস্বরুপ একজন  ব্যভিচারির  কথা বলা যায় ।যাদের শিক্ষা -দীক্ষার ,সংস্পর্শ-সাহচর্যর ও খারাপ খারাপ  কাজের দৃষ্টান্তের  ফলে-এবং যাদের  উৎসাহ দান ও আকর্ষন সৃষ্টির  ফলে  লোকটির মধ্যে  অনাচার ও ব্যভিচারের কু-স্বভাব জেগে উঠেছে ,তার ব্যভিচারের  উওরাধিকার  লাভ করেছে ,সে পর্যন্ত  তার দায়িত্ব সম্প্রসারিত হয়ে পড়ে । এভাবে  এর ধারাবাহিকতায়  সে সর্বপ্রথম মানুষটি পর্যন্ত পৌছায় ,যে মানুষটি সকলের আগে মনিবজাতিকে কু-প্রবৃওির চরিতার্থের  জন্য  এই ভ্রান্তপথ দেখিয়েছে । এটি হচ্ছে েএ ব্যভিচারের হিসাবের সেই অংশ ,যার সম্পর্ক রয়েছে তার সমসাময়িক ও তার পূর্ববতী লোকদের সঙ্গে । সে সঙ্গে  সে নিজেও নিজের ব্যভিচারের জন্য দায়ি।তাকে ভালো -মন্দের যে পার্থ্যক্য বোধ দেওয়া হয়েছিল ,তার মধ্যে যে বিবেক-শক্তি ছিল ,তার মধ্যে আত্মসংযমের যে সামর্থ্য রক্ষিত ছিল ,সৎলোকদের কাছ থেকে  ভালো মন্দের যে বিবেক সে লাভ করেছিল ,চরিএবান লোকদের যে নৈতিক  আদর্শ ও উজ্জল দৃষ্টান্ত তার সামনে ছিল ,যৌন উচ্ছৃংখলতার খারাপ পরিণতি সম্পর্কে যে সাধারন ঙ্গান ও অভিঙ্গতা তার ছিল ,তন্মধ্যে কোনো  একটি জিনিস দ্বারাও  সে কার্যত  ফায়দা লাভ করেনি ;বরং নফস বা কুপ্রবৃওির  অন্ধ  আবেগ  ও দাবির কাছে সে সম্পুর্ণ  আত্বসমর্পণ করেছে , যার একমাএ  লক্ষ্য ছিল যে কোনো  উপায়ে যে কোনো উপায়ে যে কোনো  পথে যৌনাকাঙ্খার চরিতার্থতা লাভ -পরিতৃপ্তি অর্জন ।এটি তার হিসাবের  একান্তভাবে নিজস্ব  অংশ -নিজস্ব কৃতকর্ম মাএ।অতঃপর যে অন্যায় ও পাপাচার  সে নিজে করেছে যা নিজস্ব  চেষ্টা-যত্নে  সে লালন -পালন করেছিল,অন্যান্য লোকদের  মধ্যেও  তা বিস্তার করতে থাকে । কোনো সংক্রামক ব্যাধির স্পর্শ কোথাও থেকে সে গ্রহণ করে ,পরে সে তার নিজের বংশধর- আর খোদা জানেন -কত কত লোকদের  মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে না -জানি কত শত মানুষের  জীবন নষ্ট করে । কোথাও সে নিজের শুক্রকীট নিক্ষেপ করে আসে : ফলে যে সন্তানের  লালন -পালনের সম্পূর্ণ দায়িত্ব তার নিজের পালন করা কর্তব্য ,তাকে অপর কারো উপার্জনের  অবৈধ অংশিদার ,তার নিজের ঔরসজাত সন্তানের  অধিকারের ওপর জবরদস্তি ভাগীদার ,তার মীরাসের না-হক  অধিকারি  বানিয়ে দেয়।

Leave a Comment