অপার করূণার অধিকারী রাজাধিরাজ সর্বঙ্গ প্রঙ্গাময় সর্বোওম কুশলি মহান আল্লাহর কৌশল বুঝায় সাধ্যকার ?যিনি দুশমনের ঘরে নিজ দোস্তের প্রতিপালনের ব্যবস্থা করেন ,সূরা ত্ব-হা তে মুসা (আ) ও ফিরাউনের এমন একটি ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন । যা প্রশ্নালোকে বিষয়ভিওিক নিম্নে উপস্থাপন করা হলো । মূসা (আ) -এর মাতার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ:রাজপ্রাসাদে তাওয়াফের জন্যে আগমন করলে ইমরান তার সাথে গোপনে মিলিত হয় । ফলে খ্রিষ্টপূর্ব১৩৫১সালের কোনো এক রজনীতে মুসা (আ)জন্ম গ্রহন করেন ।জন্মের পর মাতা তাকে গোপন করে রাখেন ।কিন্ত গুপ্তচরদের বারবার আনাগোনা ও তল্লাশি থেকে তাকে বাঁচিয়ে রাখা খুবই মুশকিল হয়ে পড়েছিল বিধায় তার মাতা খুবই পেরেশানিতে ছিলেন । এ অবস্থায় মহান আল্লাহ স্বপ্নের মাধ্যমেতার মাতাকে বিশেষভাবে অনুগ্রহ করেন এবং তাকে জানিয়ে দেন যেন তাকে সিন্দুকে ভরে নদীতে ভাসিয়ে দেন ।
অতঃপর মুসা (আ)-এর মাতা শিশু মুসাকে নীল নদে ভাসিয়ে দেন ।
রাজ প্রাসাদে আশ্রয় লাভ: শিশু মুসা (আ)-কে সিন্দুকে ভরে নীল নদে ভাসিয়ে দিলে ,সিন্দুক ভাসতে ভাসতে যখন রাজ প্রাসাদের প্রমোদ কাননের কাছে গিয়ে পৌছে,তখন ফিরাউনের পত্নী এসে তা দেখতে পায় ।সে সিন্দুকটি তীরে উঠিয়ে খোলার পর তাতে ফুটফুটে এক নবজাতককে দেখে ,তাকে পূএবৎ প্রতিপালন করার জন্যে ফিরাউনকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানায় ।অবশেষে ফিরাউন এতে সম্মত হয় । মূসা (আ) এর মাতার ধাএীরুপে নিযুক্ত : শিশু মুসা (আ)কে নীল নদে ভাসেয়া দিয়ে মাতা স্বীয় কন্যা মারইয়ামকে সিন্দুকের প্রতি দৃষ্টি রাখতে আদেশ প্রদান করেন । মারইয়াম দূর থেকে অতি সতর্কতার সাথে সিন্দুকের প্রতি দৃষ্টি রাখছিলেন । ফিরাউনের পত্নি এসে যখন সিন্দুকটি নীল নদ থেকে তুলে রাজ প্রাসাদে নিয়ে যায় ,তখন মারইয়াম সুযোগমতো ঐ রাজ প্রাসাদে প্রবেশ করে ।এক পর্যায়ে ফিরাউন শিশু মূসার প্রতিপালনের জন্যে ধাএী নিয়োগের আদেশ করলে মারইয়াম একজন যোগ্য ধাএীর তথ্য দেয়। আর সে ধাএী হলো-শিশু মুসার আপন মাতা। অবশেষে ফিরাউনের আদেশ অনুযায়ী মুসার মাতাই আহুত হলে স্বীয় পুএকে স্তন্যদান ও প্রতিপালনের দায়িত্ব প্রাপ্ত হন ।
কিবতি হত্যা ও মাদইয়ানে হিজরত ঃ
রাজ প্রাসাদে আপন মাতার আদর ভালবাসায় সিক্ত হয়ে মুসা (আ) অত্যন্ত রাজকীয় পরিবেশে লালিত-পালিত হতে থাকেন ।আর বনী ইসরাঈলিদের প্রতি তার বিশেষ আন্তরিক টান ছিল।তখন বনী ইসরাঈলদের ওপরে কিবতিদের অমানুষিক নির্যাতন চলতো।মাঝে মাঝে মুসা এ অমানুষিক নির্যাতনের প্রতিবাদ করতেন ।একদা প্রতিবাদ করতে গিয়ে তিনি একজন কিবতিকে হত্যা করে ফেলেন।
অন্যদিকে কিবতি হত্যার ঘটনা ফিরাউন শুনতে পেয়ে মুসা(আ) -এর মৃত্যুদন্ডের ঘোষণা দেয় ।আর মুসা (আ) এ সংবাদ শ্রবণান্তে তৎক্ষণাৎমাদইয়ানে হিজরত করেন ।
বৈবাহিক জীবনে মুসা (আ) :
মাদইয়ানে হিজরত করার পর মুসা (আ) সেখানে শোয়াইব (আ) -এর কন্যা সফুরাকে বিবাহ করেন।অতঃপর সুদির্ঘ ৮ বছর মতান্তরে ১০বছর তথায় অবস্থান শেষে তূর পাহাড়ের পাদদেশ দিয়ে নিজ পত্নিকে মিসরে প্রত্যাবর্তন করেন ।
তূর পাহাড়ে মুসা (আ) এর আগুন দর্শন :
মাদইয়ান থেকে মিসরে প্রত্যাবর্তনের সময় হঠাৎ দেখতে পান যে ,তুর পর্বতের চূড়ায় একটি গাছের ডালে আগুন জ্বলছে । তাই তিনি সম্মুখে অগ্রসর হয়ে এক পর্যায়ে গাছটির নিকট পৌছে ভাবতে থাকেন আগুনের কোনো স্ফলিঙ্গ মাটিতে পড়লে-তিনি তা তুলে নিবেন।অনেকক্ষন অপেক্ষার পর যখন এমন হলো না ,তখন তিনি কিছু ঘাস ও খড়কুটা এক িএত করে তা আগুনের কাছে ধরতে ইচ্ছে করলে ,আগুন পিছে সরে যায় । কোনো কোনো বর্ণনায় আছে আগুন তার দিকে অগ্রসর হলে তিনি অস্থির হয়ে পিছনে সরে যায়।কোনো কোনো বর্ণনায় আছে আগুন তার দিকে অগ্রসর হলে তিনি অস্থির হয়ে পিছনে সরে যান।
তূর পাহাড়ে আল্লাহর ওহি শ্রবণ:
তূর পাহাড়ে বিচিএ এক প্রকার আগুন দেখেও শেষ পর্যন্ত মুসা (আ) তা ধারণ করতে না পেরে, সেখান থেকে ফিরে আসতে মনস্থ করলে তৎক্ষণাৎ তিনি ওহি প্রাপ্ত হন।
ফিরাউনকে একত্ববাদের দাওয়াত দেয়ার জন্যে নির্দেশঃ
তুর পর্বতে ওহি প্রাপ্ত হওয়ার পর মহান আল্লাহ ফিরাউনের কাছে একত্ববাদের দাওয়াত নিয়ে গমন করার জন্যে মুসা (আ) -কে নির্দেশ প্রদান করেন । নির্দেশ প্রাপ্ত হয়ে তিনি দাওয়াতের কাজে সহযোগিতা করার জন্যে স্বীয় ভ্রাতা হারুন (আ) -কে তার সহযোগি হিসেবে নিয়োগ দানের জন্যে আল্লাহর কাছে আবেদন করেন ।