সূরা নিসার শানে নুযুল (৬২-৬৩)

সুরা নিসা আয়াতের শানে নুযূল

সূরা নিসা আয়াতের শানে নুযুল- মুনাফিকরা চরম নির্লজ্জ।তাদের ওপর কোনো বিপদ আসলে তারা নমনীয় হয়ে যায় ,কিন্তু বিপদ সরে গেলে আবার উচ্ছৃঙ্খল হয়ে উঠে। তাদেরই দুষ্কৃতি ও কৃতকর্মের কথা উল্লেখ করে  আল্লাহ তায়ালা আলোচ্য আয়াত ইরশাদ করেন ,মুনাফিকরা রাসুল (সা) -এর বিচার অমান্য করাজনিত অপরাধের জন্য যখন কোনো বিপদের সম্মুখীন হবে ,তখন তাদের কি রুপ অবস্থা হবে?

অতঃপর তারাই আবার আল্লাহর নামে শপথ করে এসে বলবে ,হে মুহাম্মদ (স) !আসলে আমরা আপনার ফয়সালার প্রতি অবহেলা করে নয় ,বরং পরস্পরের প্রতি আরও সম্প্রীতি ও কল্যাণের আশায় হযরত ওমর (রা) এর নিকট গিয়েছিলাম ।এই ছাড়া ভিন্ন আমাদের কোন উদ্দেশ্য ছিল না।                                                                                         মুনাফিকরা ইসলামের ক্ষতিসাধনে লিপ্ত। সুতরাং তাদের কথায় কান না দিয়ে মুসলমানদের  উচিত দ্বীনের পথে অটল থাকা ।আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা  এ প্রসঙ্গে ইরশাদ করেন -এরা তো তারাই ,যাদের অন্তরের সকল নেফাকীর কথা  আল্লাহর জানা রয়েছে ।অতএব তাদের এ ধরনের বহ্যিক শপথে কোনো কাজ দেবে না । হে মুহাম্মদ (স) !তাদের ওজর গ্রহণ করা  থেকে বিরত থাকুন । আর তাদেরকে উপদেশ দিন,      তারা যেন নেফাকী থেকে  বিরত থাকে এবং নিষ্ঠার সাথে  ঈমান আনয়ন করে  ।আর আপনি তাদেরকে এমন কথা বলুন ,যা তাদের হ্দয়ের গহিন কোণে গিয়ে পৌছে।                         নবী রাসুলগণ  উম্মতের জন্য শ্রেষ্ঠ নেয়ামত । তাদের দিক নির্দেশনা অনুযায়ি চললেই উম্মতের শান্তি হতে পারে । তাদেরকে প্রেরনের মূল উদ্দেশ্যই হলো তাদের অনুসরণ করা হবে এ পৃথিবীতে। এ প্রসঙ্গে ইরশাদ হচ্ছে আল্লাহর নির্দেশ  অনুসারে তার রাসুলের কথা মেনে চলবে বলেই আমি রাসুল প্রেরণ করেছি ।অর্থাৎ রাসুলের আনুগত্য করা অপরিহার্য।       তারা যখন নেফাকি ও তাগুতের নিকট বিচারপ্রার্থি হওয়ার কারনে নিজেদের ওপর জুলুম করে ফেলেছিল,                তখন যদি তারা আপনার নিকট আসত ,আল্লাহর নিকট ক্ষমাপ্রার্থনা করত ,আর স্বয়ং রাসুলও তাদের জন্য ক্সমা চাইতেন । তাহলে তারা আল্লাহকে অবশ্যই তাওবা  কবুলকারি এবং অতিশয় দয়ালু হিসেবে পেত।তিনি তাদের সকল ওযর গ্রহন করতন।

বর্ণিত আছে যে (সূরা নিসা আয়াতের শানে নুযূল) যখন হযরত ওমর (রা) রাসূল (সা) এর রায় মেনে নিতে অস্বীকৃতি ঙ্গাপনকারি মুনফিক ব্যক্তিটিকে হত্যা করেছিলেন । তখন নিহত ব্যাক্তির আত্বিয় স্বজন  রক্তপণ দাবির জন্য রাসুল (সা) এর দরবারে উপস্থিত হয়ে আল্লাহর নামে শপথ করে বলে যে ,আমরা তো হযরত ওমর (রা) এর নিকট গিয়েছি শুধু এজন্য যে,তিনি জন্র আমোদেরকে একটি সুন্দর পরামর্শ  প্রদান করেন এবং আমদের পরস্পরের মাঝে সম্প্রীতি ও সদ্ভাব সৃষ্টি করে দেন ।

এতদ্ভীন্ন আমাদের অন্য কোন উদ্দেশ্য ছিল না তাদের এ অহেতুক শপথের প্রত্যুওরে আল্লাহ তায়ালা আলোচ্য আয়াতটি নাযিল করেন ।

হযরত আবু বকর আসাম (র) বলেন,মুনাফিকদের একটি সম্প্রদায়  রাসুল (স) এর ব্যপারে একটি ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল। উক্ত ষড়যন্ত্র  বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তারা রাসুল ( স) এর দরবারে উপস্থিত হলো।ঠিক সে মুহুর্তে আল্লাহ তাআ’লা জিবরাইল (আ) এর মাধ্যমে রাসুলকে সে ষড়যন্ত্র সম্পর্কে অবহিত করলেন।  তখন রাসুল (স) আগত কাফেলাকে লক্ষ্য করে বললেন, একটি দল একটি অন্যায় পরিকল্পনা নিয়ে এখানে  উপস্থিত হয়েছে,

অথচ তাদের এই পরিকল্পনা আদে্্য বাস্তবায়িত হবে না।সুতরাং তারা যেন দাঁড়িয়ে যায় এবং আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করে, আর আমিও যেন তাদের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করতে পারি। কিন্তু তারা দাড়ায়নি।তখন তিনি তাদের পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন তোমরা কি দাড়াবে না? তখন তারা কোনরুপ সাড়া দেয়নি।

তখন রাসুল (স) কিছুটা ক্ষিপ্ত হয়ে বললেন হে অমুক দাঁড়া। হে অমুক দাঁড়া। এভাবে নিদিষ্ট দশজনকে দাড় করালেন।তখন তাদের হুশ হয়েছে

এবং তারা বলতে শুরু করেছে যে আমরা আপনার কথা অনুযায়ী  ক্ষমাপ্রার্থনার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহন করলাম।আমরা আমাদের কৃত অপরাধের জন্য  তওবা করছি।

আপনি আমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন।তখন রাসুল (স) বললেন, এখন?  না এখন আর কোন ক্ষমাপ্রার্থনা করব না। প্রথমে আমি ক্ষমাপ্রার্থনার জন্য প্রস্তুত ছিলাম,আর আল্লহও তা কবুলের জন্য প্রস্তুত ছিলেন।

আমি যখন চেয়েছিলাম তখন তোমরা সাড়া দেওনি।সুতরাং এখন আর কোন ক্ষমা নেই।  আমার এখান থেকে বের হয়ে যাও। তখন এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই আয়াতটি নাযিল করেন।  ৷ ইসলামি আরো তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটির সাথে থাকুন।

এখানে বিভিন্ন ইসলামিক তথ্য নিয়ম কানুন মাসয়ালা মাসায়েল সম্পর্কে আলোচনা  করা হয়।

 

Leave a Comment