মুজাম্মিল এর অর্থ কাপড়ে আবৃত ।রাসূল (স) এর একটি সাময়িক অবস্থা ও বিশেষ গুণ দ্বারা সম্বোধন করা হয়েছে । কারন তখন রাসুল (স)ভীষন ভয় ও উদ্বেগের কারনে তীব্র শীত অনুভব করেছিলেন এবং কাপড় পরিহিত অবস্থায় হয়েছিলেন ।সহীহ বুখারি ও মুসলিমে হযরত জাবের (রা) এর রেওয়াতক্রমে বর্ণিত আছে,
সর্বপ্রথম হেরা গিরি গুহায় ,রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর কাছে ফেরশতা জীবরাঈল আগমন করে ইকরা সূরায় প্রাথমিক আয়াত সমূহ পাঠ করে শোনান । ফেরেশতার এই অবতরণ ও অহীর তীব্রতা প্রথম পর্যায়ে ছিল । ফলে এর স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় । রাসুলুল্লাহ (স) হযরত খাদিজা (রা) এর নিকট গমন করলেন ।
এবং তীব্র শীত অনুভব করার কারনে বললেন ,আমাকে কাপড় দিয়ে ঢেকে দাও ,আমাকে কাপড় দিয়ে ঢেকে দাও ।’’ এরপর কিছুদিন পর্যন্ত ওহির আগমন বন্ধ থাকে । বিরতির এই সময়কালকে ‘‘ফতরাতুল ওহি ‘’ বলা হয় । রাসূল (সাঃ)হাদিসে এই সময়কালের উল্লেখ করে বলেনঃএকদিন আমি পথ চলা অবস্থায় হঠাৎ একটি আওয়াজ শুনে আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখি , হেরা গিরি গুহার সেই ফেরেশতা আকাশ ও পৃথিবীর মাঝখানে একজায়গায় এক ঝুলন্ত চেয়ারে উপবিষ্ট রয়েছেন ।
তাকে এই আকৃতিতে দেখে আমি প্রথম সাক্ষাতের ন্যায় আবার ভয়ে ও আতংকে অভিভূত হয়ে পড়লাম । আমি গৃহে ফিরে এলাম এবং গৃহের লোকজনকে বললাম ঃআমাকে কাপড় দিয়ে ঢেকে দাও এই পরিপেক্ষিতে এই আয়াত নাযিল হয়। এই হাদিসে কেবল এই আয়াতের কথায় বলা হয়েছে ।তাফসীরের সার সংক্ষেপের বর্ণনানুযায়ি এই আয়াতের ঘটনা পৃথকও হতে পারে । এভাবে সম্বোধন করার মধ্যে বিশেষ এক করুণা ও উপাসনালয়সমুহে এ ধরনের শেরেকী করে থাকে ।
সুতরাং আয়াতের সারমর্ম এই যে ,মসজিদসমূহে ভ্রান্ত বিশ্বাস ও মিথ্যা কর্মকান্ড থেকে পবিএ রাখতে হবে। এমতাবস্থায় এই আয়াতের অর্থ এই হবে যে সকল সেজদাহ আল্লাহর জন্যই নির্দীষ্ট ।যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালা ব্যতিত অন্য কাউকে সাহায্যকারী হিসেবে ডাকে ,সে যেন তাকে সেজদা করে ।
অতএব অপরকে সেজদাহ করা থেকে বিরত থাক ।
উম্মতের ইজমাহ তথা ঐক্যমত্য আল্লাহ তায়ালা ব্যতিত অপরকে সেজদাহ করা হারাম এবং কোন কোন আলেমের মতে কুফর । এখানে আল্লাহ তায়ালা রাসুলকে আদেশ করেছেন যেসব অবিশ্বাসী আপনাকে কেয়ামতের নির্দীষ্ট দিন -তারিখ বলে দেয়ার জন্য পীড়াপিড়ি করে ,তাদেরকে বলে দিন ঃকেয়ামতের আগমন ও হিসাব নিকাশ নিশ্চিতঃ কিন্তু তার নির্দিষ্ট দিন তারিখ আল্লাহ তায়ালা কাউকে বলেননি । তাই আমি জানিনা কেয়ামতের দিন আসন্ন না আমার পলনকর্তা এর জন্য দীর্ঘ মেয়াদ নির্দিষ্ট করে দিবেন।
অন্য আয়াতে বর্ণনা করেছেন যে,আমার না জানার কারন এই যে আমি আলিমুল গায়েব নই ঃবরং আলেমুল গাযেব বিশেষনটি একমাএ আল্লাহ তায়ালার বিশেষ গুন ।আর তিনি এই ব্যপারে কাউকে অভিহিত করেন না । আর এই ব্যপারে কোন নির্বো ধ লোকের মনে এই প্রশ্ন উদয় হতে পারে যে ,রাসুল (সাঃ) অদৃশ্য বিষয়ে ঙ্গানরাখেন না তো তিনি রাসূল হলেন কিরুপে? কেননা রাসুলের কাছে আল্লাহ তায়ালা হাজারো গায়েবের বিষয় ওহির মাধ্যমে প্রেরণ করেন । যার কাছে ওহি আসে না ,সে নবী ও রাসুল হতে পারে না ।
গায়েব ও গায়েবের খবরের মধ্যে পার্থক্যঃ রাসুল গায়েব জানেন না এই কথাটির অর্থ যে কোন গায়েব জানেন না তা নয় । বরং রেসালাতের জন্য যে পরিমান গায়েবের খবর বিষয়াদির ধারনা কোন রাসূলকে দেয়া অপরিহার্য ,সেই পরিমান গায়েবের খবর ওহির মাধ্যমে রাসূলকে দান করা হয়েছে এবং তার খুবই সংরক্ষিত পথে দান করা হয়েছে । যখন রসুলের প্রতি আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে ওহি অবতীর্ণ হয় ,তখন তার চতুর্দিকে ফেরেশতাগণের প্রহরা থাকে,যাতে শয়তান কোনরুপ হস্তক্ষেপ করতে সক্ষম না হয়।
এখানে রসুল শব্দ দ্বারা প্রথমে রসূল ও নবীকে প্রদও গায়েবের প্রকার নির্ধারণ করা হয়েছে যে ,তা হচ্ছে শরিয়ত ও বিধি বিধানের শিক্ষা । এবং সময়পোযোগি গায়েবের খবর ।
কোন কোন মূর্খলোক গায়েব ও গায়েবের খবরের মাঝে পার্থক্য বোঝে না ।তারা পয়গম্বরের জন্য বিশেষত শেষ নবী (স) এর জন্য সর্বপ্রকার এলমে গায়েব সপ্রমান করার প্রয়াস পায় । এবং তাকে আল্লাহ তাআলার অনুরুপ আলেমুল গায়েব তথা সৃষ্টির প্রতিটি অনু পরমানু সম্পর্কে ঙ্গানবান মনে করে ।এটা পরিষ্কার শিরক এবং রাসূলকে আল্লাহ তাআলার আসনে আসিন করার অপপ্রয়াস বৈ নয় । (নাউযুবিল্লাহ)
যদি কোন ব্যক্তি তার ভেদ তার বন্ধুকে বলে দেয় ,এতে দুনিয়ার কেউ তার বন্ধুকে আলেমুল গায়েব আখ্যা দিতে পারে না ।