যেকোন বস্তু বা কাজের ইচ্ছা করাকে হজ্জ বলে ।
পারিভাষিক সংঙ্গা ঃ শরিয়তের পরিভাষায় হজ্জের সংঙ্গা বর্ণনা করতো গিয়ে বিভিন্ন মনিষী বিভিন্ন উক্তি উপস্থাপন করেছেন । আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট কর্মের মাধ্যমে কাবা শরীফ যিয়ারতের সংকল্প করাকে হজ্জ বলা হয়। হজ্জ হলো কোন মহান কাজের ইচ্ছা করা । পরিভাষায় নির্দিষ্ট গুণের সাথে নির্দিষ্ট শর্তাবলি সাপেক্ষে নির্দিষ্ট সময়ে আল্লাহ তায়ালার ঘর যিয়ারতের ইচ্ছা করাকে হজ্জ বলা হয়।
নির্দিষ্ট সময় নির্দিষ্ট স্থান যিয়ারত করাকে হজ্জ বলা হয় ।

হজ্জ ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভের অন্যতম । যা বিশ্বে মুসলিম মিল্লাতের মিলন কেন্দ্র । পৃথিবির সকল মানুষকে পৃথিবির প্রতিটি স্থান হতে আল্লাহ তায়ালার সার্বজনিন আহ্বানে সাড়া দেয়ার জন্য একটি কেন্দ্রে এক িএত করে দেওয়া এবং অসংখ্য বংশ গোএ ও জাতিকে সৌহার্দপূর্ণ ভ্রাতৃসংঘে সম্মিলিত করে দেওয়ার ব্যপারে হজ্জ এক অনুপম ভুমিকা পালন করে থাকে । আর্ন্তজাতিক ভাবেও মুসলিম বিশ্বে হজ্জ অপরিসিম গুরুত্বের দাবিদার ।
সর্বোপরি হজ্জের মধ্যে রয়েছে শরয়ি ও সামাজিক ও অর্থনৈতিক সীমাহীন অন্তনির্হিত গুরুত্ব । হজ্জব্রত পালন করা আল্লাহ তায়ালার এক অমোঘ বিধান । এ বিধানটি বাস্তবায়নের ক্ষে েএ রয়েছে শারিরিক ,মানুসিক ও আর্থিক ত্যাগের সমন্নয় । সুতরাং শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে ও এর গুরুত্ব অপরিসিম । নিচে হজ্জের শরয়ী বিধান সংবলিত কুরআন ও হাদিসের কতিপয় উদ্ধৃতি উল্লেখ করা হলো
যেসব লোক কাবাঘরে পৌছার সামর্থ রাখে তারা অবশ্যই যেন আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জব্রত পালন করে । আর যে ব্যক্তি অস্বিকার করে আল্লাহ তায়ালা বিশ্ববাসির প্রতি মুখাপেক্ষি নন।
তোমরা আল্লাহর জন্য হজ্জ ও ওমরা পূর্ণ কর।
হজ্জের সময় কোনরুপ ব্যভিচার অশ্লিলতা ফাসিকি কর্ম এবং ঝগড়া বিবাদ বা যুদ্ধবিগ্রহে লিপ্ত হওয়া যাবে না । রাসুল (সা) বলেন , যে ব্যক্তি হজ্জব্রত আদায় করে এবং সর্বপ্রকার অন্যায় অশ্লিল কাজ থেকে দুরে থাকে ,সে এমন নিষ্পাপ অবস্থায় ফিরে আসল যেন সেদিনই সে জন্মগ্রহন করল।
এক ওমরা হতে অপর ওমরা পর্যন্ত মাঝখানের গুনাহের জন্য ওমরা কাফফারাস্বরুপ ।আর মকবুল হজ্জের প্রতিদান একমাএ জান্নাত । রাসুল (সা) বলেছেন ,যে ব্যক্তি এ পরিমাণ পাথেয় এবং বাহনের মালিক হয়েছে যা তাকে আল্লাহর ঘর পর্যন্ত পৌছে দিবে ,অথচ সে হজ্জ করেনি ,সে ইহুদি কিংবা নাসারা হয়ে মৃত্যুবরণ করুক তাতে আল্লাহর কিছু আসে যায় না । ‘’
সাধারণত হজ্জে কিরান উওম অর্থাৎ হজ্জে তামাওু এবং হজ্জে ইফরাদ হতে উওম । আর হজ্জে কিরান হচ্ছে -মীকাত হতে হজ্জ এবং ওমরার নিয়তে উভয়ের জন্য একসাথে ইহরাম বাধা ইহলাল হলো উ চ্চৈস্বরে তালবিয়া পাঠ করা । (এর নিয়ম ) নামাযের পরে বলবে তথা সে ইহরামের উদ্দেশ্যে দুরাকাত নামায আদায় করার পর এই দোয়া পাঠ করবে –
অর্থাৎ হে আল্লাহ আমি হজ্জ এবং ওমরার নিয়ত করেছি আপনি আমার জন্য উভয়কে সহজ করে দিন এবং উভয়টিকে আমার হতে কবুল করুন ) আর ওমরার জন্য সাত চক্কর তাওয়াফ করবে । প্রথম তিন চক্করে রমল করবে । হলক করা ব্যতিত সাফা ও মারওয়ার মধ্যে সায়ী করবে ।তারপর বর্ণিত নিয়মে হজ্জ করবে । অতঃপর যদি উভয়ের জন্য এক েএ দু তাওয়াফ এবং দু সায়ী করে তবে তা মাকরুহ হবে । অর্থাৎ সাত চক্কর ওমরার জন্য আর সাত চক্কর হজ্জের তাওয়াফে কুদুমের জন্য ,মোট ১৪ চক্কর একসাথে করা এরপর অনুরুপ হজ্জ এবং ওমরার জন্য দু সায়ী এক েএ করা মাকরুহ । এরুপ করা মাকরুহ এ জন্য যে সে ওমরার সাথীকে পিছিয়ে দিয়েছে এবং তাওয়াফে কুদুমকে এগিয়ে নিয়েছে ।
যেমন কিরান হজ্জকারীর জন্য এরুপ করা মাকরুহ । আর কুরবানির দিনের কঙ্কর নিক্ষেপের হজ্জে কিরানের জন্য জবাই করবে । আর যদি জবাই করতে অক্ষম হয়,তাহলে তিনটি রোযা এমনভাবে রাখবে যাতে শেষ রোযা আরাফাত দিনে হয় ,আর সাতটি রোযা হজ্জের তথা আইয়ামে তাশরীকের পর যেখানে ইচ্ছা রাখবে ।
অতঃপর যদি তিনটি রোযা ভঙ্গ হয় ,তাহলে দম নির্ধারিত হয়ে যাবে । আর যদি ওমরার পূর্বে আরাফায় অবস্থান করলো ,তাহলে ওমরা বাতিল হয়ে যাবে । সুতরাং তা কাযা করতে হবে ।
তখন তথা ওমরা ছেড়ে দেওয়ার দম ওয়াজিব হবে এবং কিরানের দম রহিত হয়ে যাবে ।
কেরান হজ্জ আদায়কারী যদি ওমরা আরম্ভ করার পর তা শেষ না করেই আরাফায় অবস্থান করে তবে তার ওমরা বাতিল হয়ে যাবে এবং এর কাযা ওয়াজিব হবে । কারণ সে ওমরার কাজ আরম্ভ করার ফলে তা ওয়াজিব হয়ে গেছে । সুতরাং তা সম্পন্ন না করার কারনে তার যিম্মায় এর যিম্মায় এর কাযা ওয়াজিব হবে । এ হুকুম তখনই কার্যকর হবে ,যখন সে ওমরার তাওয়াফের কিয়দাংশের পর উকুফে আরাফা করে ,তথা যদি সে চার চক্কর দিয়ে উকুফে আরাফা করে তাহলে
উমরা বাতিল হবে না । হজ্জের শেষে বাকি তাওয়াফ করে নিলে ওমরা আদায় হয়ে যাবে ।