হুনাইনের যুদ্ধের ঘটনা

হুনায়নের যুদ্ধ

হুনাইনের যুদ্ধের ঘটনা

ইসলামি আন্দোলনের  ইতিহাসে হুনাইনের যুদ্ধের গুরুত্ব  অপরিসীম। হুনাইন মক্কা ও তায়েফের মধ্যবর্তি একটি  উপত্যকার নাম। এ যুদ্ধ ছিল  মুসলমানদের  ঈমান ,ধৈর্য্য ও আত্বা জিঙ্গাসার পরিক্ষা ।

হুসাইন যু্দ্ধের কারনসমুহ ঃ

কাবাঘর পুনরুদ্ধারের  ইচ্ছা ঃ

মক্কা বিজয়ের  মাধ্যমে কাবাঘর থেকে  পৌওলিকতার অবসান ও একত্ববাদের প্রতিষ্ঠা করা হলে মক্কা ও তায়েফের মধ্যবর্তী স্থানে বাসকারী পৌওলিক গোএসমুহ কাবাঘর পুনরুদ্ধারের জন্যে যুদ্ধ ঘোষণা করে ।

মক্কা বিজয়ের পর মক্কা ও তায়েফের মধ্যবর্তী অঞ্চলে হাওয়াজিন  ও সাকিফ গোএদ্বয় ইসলামের  বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে ।পৌওলিকতার পরাজয়ের পর  কাবা মুসলমানদের আওতাভুক্ত হলে বিধর্মি গোষ্ঠি ইসলামকে  উচ্ছেদ করে  মূর্তি পূজা পুনঃ প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা করে এবং পবিএ  আল্লাহর ঘর পুনরায় দখলের চেষ্টা করে । বেদুইনদের সহযোগিতায় এ দুই গোএ মক্কার তিন মাইল দুরবর্তী হুনাইন উপত্যকায় ২০০০০ সৈন্য সমাবেশ করে ।৬৩০ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ শে জানুয়ারি মুসলমান ও কুরাইশদের একটি সম্মিলিত বাহিনী মক্কা ত্যাগ করে ।মক্কায় অবস্থানের তিন সপ্তাহের মধ্যে হযরত মুহাম্মদ (স) কে এক বিশাল শএু বািহিনীর সম্মুখিন হতে হয় ।মুসলমানদের পক্ষে মোট ১২০০০সৈন্য হুনাইনের প্রান্তরে শএুর মোকাবেলা করে । যুদ্ধের প্রথমদিকে মুসলমানগণ  বিপর্যয়ের সম্মুখিন হয় ।অবশেষে  মহানবী (স) এর দৃঢ় ও বরিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং সেনাপতি হযরত খালিদ (রা)  এর বীরত্বের  কারণে মুসলিম বাহীনি জয় লাভ করে । যুদ্ধে প্রায় ছয় হাজার শএু সৈন্য বন্দি হয় । বিপুল সংখ্যক গবাদী পশু ,প্রচুর পরিমাণে রৌপ্য ও সমরাস্‌ এ  মুসলমানদের হস্তগত হয় ।

তায়েফ বিজয়ঃ 

হুনাইনের যুদ্ধে পরাজিত  শএু সৈন্যগণ তায়িফের দুর্গে আশ্রয় গ্রহন করে পুণরায় মুসলমানদের বিরুদ্ধে অভিযানের  পরিকল্পনায় মেতে উঠে । সংবাদ পেয়ে হযরত মুহাম্মদ (স) আবু মুসার  অধিনায়কত্বে  একটি বিশাল মুসলিম বাহিনি তায়েফ প্রেরণ করেন । ।তিন সপ্তাহ অবরুদ্ধ থাকার পর তায়িফবাসি একদিন  মহানবি (স)  কে প্রস্তর  দ্বারা  আঘাত করেছিল ,মুসলিম বাহিনীর  আক্রমণে তারা ভীত ও আকলশূন্য  হয়ে পড়ল  এবং মদিনার শাসনাধীনে হযরত মুহাম্মদ (স)  এর আনুগত্যে স্বীকার করল ।তায়েফবাসী ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হল।

তাবুক অভিযান ঃ                                                                             আরবের ইহুদিগণ হযরত মুহাম্মদ (স) এর হাতে কয়েকবার পরাজয় বরণ করে সিরিয়া সংলগ্ন খাইবার  অঞ্চলে নাশকতামূলক কার্য লিপ্ত ছিল । হুদায়বিয়ার সন্ধির পর হযরত মুহাম্মদ (স) রোম সম্রাট হেরাক্লিয়াসের দরবারে  দূত পাঠান । কিন্তু মক্কা বিজয়ের পর হুনাইন  ও তায়িফে ইসলামের বিজয় হেরাক্লিয়াসের  ঈর্ষাণ্বিত হয়ে পড়ে ।তদুপরি মুতার যুদ্ধে খ্রিষ্টানদের পরাজয় এবং  ইহুদিদের প্ররোচনা তাকে উওেজিত করে তোলে  ।  ঘাসসানিদের সহযোগিতায় ৬৩০ খ্রিষ্টাব্দে নভেম্বর মাসে  লক্ষাধিক সৈন্যসহ বায়জানটাইন বাহিনী মদিনার দিকে অগ্রসর হতে থাকে । হযরত মুহাম্মদ (স) এ সংবাদ  পেয়ে সিরিয়া গমনের  বাণিজ্যের পথটিকে নিরাপদ  রাখার  জন্য  সিরিয়ার সীমান্তে  অবস্থিত তাবুক নামক স্থানে  শএুপক্ষের গতিরোধ করেন ।

মুসলিম বাহিনীতে পদাতিক সৈন্য ছিল ৩০.০০০ এবং অশ্বারোহি ১০০০০। এ যুদ্ধে হযরত  আবু বকর (রা) তার সমস্ত সম্পওি হযরত ওমর (রা) তার অর্ধেক সম্পওি  হযরত ওমর (র) তার অর্ধেক সম্পওি  এবং হযরত উসমান (রা) ১০০০ স্বর্ণমুদ্রা ,১০০০উট এবং ৭০টি  অশ্ব যুদ্ধ তহবিলে দান করেন । বিশেষ কোনো যুদ্ধবিগ্রহের প্রয়োজন হয়নি কারণ মুসলমানদের যুদ্ধে  জয়লাভ  অবশ্যম্ভাবি মনে করে বায়জান্টাইন বাহিনী সম্মুখ যু্দ্ধে অবতীর্ণ না হয়ে পলায়ন করে ।

মহানবি (স)২০দিন তাবুকে  অব স্থান করে মদিনায় প্রত্যাবর্তন করেন । হযরত মুহাম্মদ (স) এর আমলে ছোট  বড়  সর্বমোট ২৭টি যুদ্ধ সংঘটিত হয় । তন্মধ্যে তাবুক ও অন্যান্য ৮টি যুদ্ধে তিনি সক্রিয়  অংশগ্রহন করেন। তাবুকই  ছিল মহানবি (স) এর  জীবনের  শেষ অভিযান । মুসলমান সৈন্যবাহিনী তাবুক গমনকালে পথিমধ্যে গ্রীষ্মের রোধের  কিরণ  ও প্রখর রোধে তাপে  এবং পানির অভাবে ভয়ানক কষ্ট পায়।

Leave a Comment