নির্জনতা ও নির্জনবাস দ্বারা আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে মন্দ কাজ ও বেহুদা কথা থেকে বেচে থাকা। এমন নির্জনতা বক্ষকে উম্মুক্ত এবং দুশ্চিন্তা ,পেরেশানী থেকে মুক্ত করে ।
আল্লামা ইবনে তাইমিয়া (রহ) বলেছেন – ““ইবাদত,যিকির ,ফিকির তিলাওয়াত কুরআন ও নিজের নফসের হিসাব -নিকাশের জন্য বান্দার একাগ্রতা ও নির্জনতার প্রয়োজন রয়েছে। একাকিত্বের বান্দা দোয়া -ইস্তিগফার করে ,মন্দ কাজ থেকে দূরে থাকে ।”’
আল্লামা ইবনুল জাওযি(রহ)তার বিখ্যাত গ্রন্থ ‘ সায়দিল খাতির ‘এ তিনটি অধ্যায় রচনা করেছেন ,যার সারাংশ হলো –
আমি এমন কোন কিছু পাইনি যা নির্জনতার সমান সুখ , শান্তি ও মর্যাদা এনে দিতে পারে । এটা বান্দাকে গুনাহের কাজ থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করে । আখেরাতের স্মরণ বৃদ্ধি করে । আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের কথা স্মরণে রাখে।’’
এ ছাড়াও তিনি বিভিন্ন স্থানে নির্জনতা ও নির্জনবাসের উপকারিতার কথা আলোচনা করেছেন , যার সারমর্ম আমিও বিভিন্ন স্থানে অল্প বিস্তর আলোচনা করেছি ।
নির্জনতার আনুগত্য ও ইবাদতের সুন্দরতম পরিবেশ পাওয়া যায়।গভীর চিন্তা -ফিকিরের সমুদ্রে ডুব দেয়া যায় ।গবেষণা ও ভাবনার প্রকৃত স্বাদ নির্জনতায় পাওয়া যায়। আত্মা প্রশান্তি লাভ করে । নির্জনতায় লোক দেখানোর কোন বিষয় নেই । কেননা তখন একমাএ তখন আল্লাহ তায়ালাই আপনাকে দেখেন ।
পৃথিবির ইতিহাসে যত বড় বড় ব্যক্তিত্ব অতিবাহিত হয়েছেন ,তাদের সকলেই নিজেদের বড়ত্ব ও মহত্বের চারায় একাকিত্ব নির্জনতার পানি সিঞ্চন করেছেন । তারপর সে চারা এক সময় সুবিশাল মহিরুহে পরিণত হয়েছে ।
কাযী আলী ইবনে আবদুল আযীয জুরজানী (রহ)বলেছেন আমি ততক্ষন পর্যন্ত জীবনের
স্বাদ উপলব্ধি করতে পারিনি ,যতক্ষন না আমি ঘরের কোণে নির্জনবাসী হয়ে কিতাবকে নিজের সাথি করে নিয়েছি । ইলমের চেয়ে অধিক সম্মানজনক কিছু নেই । ইলম ছাড়া আমার কোনো সার্বক্ষনিক সঙ্গি নেই ।
মানুষের সাথে মেলামেশায় কেবল তো লাঞ্চনা ।
এক কবি বলেছেন – আমি একাকিত্ব ও নির্জনবাসে অভ্যস্থ,তাই সবসময় আরামে ও সুখে থাকি । আমি মানুষকে বয়কট করেছি । অতএব সেনাবাহিনি কোথাও রওয়ানা হয়েছে না কি
বাদশাহ আমাদের পরিদর্শন করতে এসেছেন ।
মুহাদ্দিস হুমাইদি (রহ)বলেছেন মানুষের সাথে মেলামেশার বিনিময়ে সমালোচনা ছাড়া কি পাওয়া যায়?
এজন্য মানুষের সাথে মেলামেশায় কম করো । হ্যা ইলম অর্জন কিংবা নিজের অবস্থা সংশোধন করার জন্য হলে সেটা ভিন্ন কথা ।
কথায় আছে যারা একাকিত্ব গ্রহন করে তারা সম্মান লাভ করে ।
এ ব্যপারে আল্লামা খাওাবী (রহ ) -এর ‘আল উযলা কিতাবটি পড়া যেতে পারে ।