🔷উশর কি
আরবি আসারা শব্দ থেকে উশর শব্দটির উৎপওি ।আরবি ভাষায় আশারা শব্দের অর্থ দশ ,আর উশরুন শব্দের অর্থ দশ ভাগের একভাগ। উশর হলো জমি থেকে উৎপন্ন ফসল ফলাদির যাকাত ।
🛑উশর সম্পর্কে কিছু ভূল ধারণা
ইসলামি আইন কানুন চালু না থাকাই জীবনের বেশ কিছু ক্ষে েএ ভূল ধারনার জন্ম হয়। ভূল ধারণা দীর্ঘদিন সময় পেয়ে তার শিকড় মজবুত করে ফেলে ।সামাজিক ও রাষ্ট্রিয় সহযোগিতা পেয়ে তা ফুলে ফুলে শোভিতহতে থাকে । এমন কি ইসলামি -রং চং মেখে ইসলাম বিরোধী কাজটি ইসলামি কাজ রুপে অবাধে চলতে থাকে । কোরআন হাদীসের নলেজ না থাকার কারনেই এ ধারণা বাসা বাধতে থাকে ।দুটি ধারণা বেশ চালু আছে –
১- ইসলামি রাষ্ট্র হলেই কেবল উশর দিতে হবে
২-খাজনা দিলে উশর দেয়া লাগবে না
দুটি বিষয়ে ই কিছু আলোচনা এখানে করা হলো –
প্রথমত ঃউশর সম্পর্কে কেউ কেউ মনে করেন ইসলামি রাষ্ট্র হলেই কেবল উশর দিতে হবে । যতদিন ইসলামি রাষ্ট্র না হবে ততদিন এ ফরজ থেকে তারা মুক্ত । এ ধারণার কোন ভিওি নেই ।ইসলামি রাষ্ট্র না হয়েও যদি নামায পড়তে হয় .যাকাত দিতে হয় ,তবে কেন উশর দিতে হবে না ?আল্লাহর নির্দেশ . আকিমুস সালাত ………….. বলে যেমন নামায কায়েম ফরজ ….. অ-আতুজ্জাকাত …. বলে যেমন যাকাত ফরজ তেমনি …..অ- আতু হাক্কাহ ইয়াওমা হাসাদিহি ……বলে ফসল মাড়াইয়ের দিনে উশর আদায় করাও ফরজ।
হে ঈমানদার লোকেরা ,তোমাদের পবিএ উপার্জন হতে খরচ কর এবং তোমাদের জমি হতে যে ফসল উৎপন্ন করি তা থেকে তোমরা ব্যয় কর । এরুপ হওয়া উচিত নয় যে আল্লাহর পথে করার জন্য নিকৃষ্টতম জিনিষগুলো বেছে নিতে চেষ্টা করবে , কেননা সেই জিনিসই যদি কেউ তোমাদের দেয় তবে তোমরা তা গ্রহন করতে কিছুতেই রাজি হবে না ।’’
আয়াতটিতে দুটি বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে –
১.একটি যাকাত ও
২.অপরটি উশর
যাকাত দিতে হবে পবিএ উপার্জন থেকে আর উশর দিতে হবে জমি থেকে উৎপন্ন ফসল হতে । যেহেতু এখানে খরচ করার প্রত্যক্ষ নির্দেশ দেয়া হয়েছে সেহেতু যাকাত ও উশর দুটিই ফরজ ।
উশর একটি আর্থিক ইবাদাত ।আল্লাহ তায়ালার হুকুম মানার নামাই ইবাদাত । আর উহার হক আদায় করে দাও উহার কাটাই মাড়াই -এর দিনেই ‘। যেহেতু আল্লাহ তায়ালা ওশর বের করার হুকুম দিয়েছেন অতএব এটি একটি ফরজ এবাদাত ।
খনিজ ও তৈল সম্পদে উশর
এখানে উশর প্রসঙ্গে জমির কেবল উৎপন্ন ফসলই নয়, জমির গভিরে লুকায়িত ধন -সম্পদ , খনি ,তৈল ইত্যাদির ক্ষে েএও ফরজ এর কথা বলা হয়েছে । এসব বিষয়ে আল্লাহর হক আদায় করার সুষ্পস্ট নীতিমালা রাসূল (স) বলে গেছেন । শুধু তািই নয় বাস্তবায়ন করেও দেখিয়েছেন
উহার হক বলতে উশর প্রদানের নির্দেশই দেয়া হয়েছে ।
যেহেতু আল্লাহ এখানে প্রত্যক্ষ নির্দেশ দিয়েছেন সেহেতু ফসলের উশর দেয়া নিঃসন্দেহে ফরজ ।
৩.তৃতীয়ত ঃআরও একটি কথা ফলমুলেও উশর বের করার নির্দেশ পাওয়া যাচ্ছে ।সে জন্য আমাদের দেশের ফলের উশর বের করার জন্য উদ্যেগ নেয়া যেতে পারে ।
এই আয়াতে কি পরিমান হক আদায় করতে হবে তা বলা হয় নাই । এ ব্যপারে ‘পরিমান ‘’ ও আদায়ের নিয়ম রাসুল (সা) নিজে হাদিসের মাধ্যমে বলে দিয়েছেন তা হচ্ছে ফসলের উশর কাটাই মাড়াই করার সংগে সংগে বের করে দিতে হবে ।
উল্লিখিত মতামতের ভিওিতে এটা সুষ্পস্ট যে ফসল মাড়াই করে উশর বের না করে গোলা বা কুঠিতে জমা করা যাবে না । ফসল কাটতে হবে ,মাড়াই করতে হবে এবং হিসাব করে উশর বের করে দিতে হবে । লক্ষ্যনীয় যে এখানে উশর বের না করাকে সীমা লঙ্ঘন বলা হয়েছে । অতএব যারা উশর বের করে না তারা সীমা লংঘনকারী।
যাকাত নেই যে পরিমানে
পাঁচটির কম উটে যাকাত নেই
চল্লিশটির কম উটে যাকাত নেই
দুইশত দিরহামের রৌপ্যের কমে যাকাত নেই
মধ্যম মানের মাল যাকাত বাবদ গ্রহন করতে হবে –
পাঁচ ওসাকের কম পরিমানে উশর নেই
(রহঃ)এর মতের অনুসারীগণের মধ্যেই উল্লেখযোগ্য অংশ উশর আদায়ের ব্যাপারে এখনও পিছনে রয়ে গেছেন ।
ইমাম আবু হানিফা (রহ) বলেন ,ভূমিতে উৎপাদিত ফসলের পরিমাণ কম বেশি যাই হোক না কেন ,তার উপর উশর আদায় করতে হবে । চাই তা সেচের মাধ্যমে কিংবা বৃষ্টির পানিতে উৎপাদিত হোক । তবে বাঁশ ,বেত ,লাকড়ি ও ঘাসের উশর দিতে হবে না ।অবশ্য ইমাম আবু ইউসুফ ও ইমাম মুহাম্মদ (রহ) বলেছেন অপচনশীল ফসল যা সংরক্ষণ করা যায় তার পরিমান পাঁচ ওয়াসাক হলে কেবল তার উপর উশর ওয়াজিব হবে ।’’ হিসেব করে উশর আদয় করতে হবে
আমাদের সমাজে কিছু ধারণা এমন আছে যে ,ফসল কাটাই মাড়াই করে গোলজাত করে ফেলে এবং ফকির মিসকিনকে অল্প করে দিতে থাকে । এভাবে এক পর্যায়ে মনে করে যে ,উশর দেয়া হয়ে গেল । কেউ তো এভাবে বলে যে ,যা দেয়া হয়েছে তার উশর এর চেয়ে বেশি দেয়া হয়ে গেছে এ ছাড়া জেনে রাখতে হবে ,হিসাব করে উশর আদায় করতে হবে ।কেউ যদি হিসাব করে উশর বের না করে বা দান করতে করতে তা সব শেষ করেও ফেলে তবুও তার উশর আদায় হবে না । যেহেতু সে হিসাব করে উশর বের করেনি সেহেতু সে হযরত আবু বকর (রাঃ) আল্লাহর একটি ফরজ অস্বীকারীদের বিরুদ্ধে বলেছিলেন ,রাসূল (সা) এর সময় যারা যাকাত দিয়েছিল তারা যদি আজ একটি উটের রশির যাকাত দিতে অস্বিকার করে তবে তাদের বিরুদ্ধে আমি যুদ্ধ করব।