সাওম এর আভিধানিক অর্থ শব্দগত দিক থেকে সাওম এবং সিয়াম উভয়টিই মাসদার । এর অর্থ হচ্ছে, যে কোন কাজ থেকে বিরত থাকার নাম সিয়াম। এর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে বিরত থাকা ,নিবৃত থাকা ,আত্মসংযম ইত্যাদি ।
কঠোর সাধনা করা ।৪.অবিরাম প্রচেষ্টা ৫ারক্ষা করা ৬ছেড়ে দেয়া
নির্দীষ্ট শর্তাবলির মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ে নির্দীষ্ট কতিপয় কার্য থেকে বিরত থাকার নাম সাওম ।
নিয়তসহ সুবহে সাদিক হতে মাগরিব পর্যন্ত পানাহার ও সহবাস থেকে বিরত থাকাকে রোযা বলা হয়। শরিয়তের বিধানাধীন ব্যক্তির সূর্যাভা প্রকাশকাল থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সর্বাধিক উপাদেয় দুটি বস্তু গোশত -রুটি ভক্ষণ ,কাম -চরিতার্থকরণ ও পানি পান করা থেকে বিরত থাকাকে সাওম বলে ।
৪.সুর্যদয় হতে সুর্যাস্ত পর্যন্ত যাবতিয় পানাহার থেকে বিরত থাকাকে সাওম বলা হয় ।
সুবহে সাদিক হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাওয়া ,পানাহার করা এবং বউসংগম থেকে বিরত থাকাকে সাওম বলা হয় ।
শরয়িতের পরিভাষায় রোযা হলো নিয়তসহ ফজর হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোযা ভঙ্গকারী বিষয় হতে বিরত থাকা । আর রোযা পূর্ণাঙ্গ হয় নিষিদ্ধ কাজ পরিত্যাগ করা ও হারাম কাজে পতিত না হওয়ার মাধ্যমে ।
সাওম ফরজ হওয়ার সময়কাল ঃরমযানের রোযা কখন ফরয হয়েছে এ সম্পর্কে ইমামগণের মাঝে ভিন্ন মত পরিলক্ষিত হয় । যেমন –
ইবনে কাসীরের অভিমত ঃ আল্লামা ইবনে কাসীর (র) সহ অধিকাংশ আলেম বলেন ,হিজরী দ্বীতিয় সনের শাবান মাসে কিবলা পরিবর্তনের ঘোষনা নাযিল করে রোযা ফরয করা হয়।
রমযানের রোযা ফরয হওয়ার আগে আশুরার রোযা ফরয ছিল । হিজরতের পর আইয়ামে বিজের এর রোযা ফরয করা হয়েছে । এরপর রমযানের রোযা ফরয করা হয়েছে এবং সাওমে আশুর ও আইয়ামে বিজ মানসুখ হয়ে গেছে ।
রমযানের রোযা ফরয হওয়ার সময়কাল সম্পর্কে আল্লামা বদরুদ্দিন আইনি (র) বলেন ,অর্থাৎ রোযা দ্বিতীয় হিজরীতে ফরয হয়েছে । কেননা রাসুলুল্লাহ (স) নবুয়তি জীবনে নয়টি রমযান পেয়েছেন ।
হিজরতের আঠারো মাসের মাথায় শাবান মাসে কিবলা পরিবর্তনের পর রমযানের রোযা ফরয করা হয়।
হিজরী শাবান মাসের ১০ তারিখ পবিএ মদিনায় রমযান মাসের রোযা ফরয হয়।
মোল্লা আলি কারীর অভিমত ঃ হিজরতের আঠারো মাসের মাথায় শাবান মাসে কিবলা পরিবর্তনের পর রমযানের রোযা ফরয করা হয় ।
সাওমের প্রকারভেদঃ
ফরয রোযা
যেমন রমযান মাসের রোযা
ওয়াজিব রোযাঃ
যেমন -মানতের রোযা ,রমযানের কাযা রোযা ও কাফফারার রোযা ও নফল রোযা করলে তার কাযা
সুন্নাত রোযা ঃ
যেমন -জুমার দিন রোযা রাখা। তাছাড়া আশুরা ,শবে বরাত ও শবে মিরাজের রোযা ।
নফল রোযাঃ
সাওয়াব অর্জন ও আল্লাহর সন্তুষ্টিলাভের উদ্দেশ্য যে রোযা রাখা তাই নফল রোযা । যেমন নিষিদ্ধ পাঁচ দিন ছাড়া বছরের অন্যযে কোনো দিন আল্লাহর সন্তুষ্টি নিমিও রোযা রাখা ।
মাকরুহ রোযাঃ
যেমন আশুরায় ১টিরোযা রাখা,শুধু শনিবার রোযা রাখা এবং সাওমে বেসাল তথা অনবরত রোযা রাখা ।
হারাম রোযাঃ
যেমন -দু ঈদের দিন ও কুরবানির ঈদের পরের তিন দিন রোযা রাখা । পরিশেষে বলা যায় মহান আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের অন্যতম মাধ্যম রোযা । তাই সর্বপ্রকার কলুষতা মুক্ত হয়ে এ রোযা পালন করা একান্ত কর্তব্য ।
মাকরুহ রোজাঃ যেমন আশুরার একটি রোযা রাখা ,শুধু শনিবার রোযা রাখা এবং সাওমে বেসাল তথা অনবরত রোযা রাখা ।
সাওম বিধিবদ্ধ হওয়ার রহস্যঃ ইসলামের তৃতীয় স্তম্ভ সাওম তথা রোযা ।শরীয়তে রোযার বিধান প্রবর্তনের পিছনে বহুবিধ হেকমত রয়েছে ।তন্মধ্যে
১।রোযার মাধ্যমে তাকওয়া বা খোদাভীতি অর্জিত হয়
২। মহান প্রভূর নৈকট্য ও সন্তুষ্টিলাভের মাধ্যমে ৩। রোযার মাধ্যমে অফুরন্ত রহমত লাভ করা যায়।
৩। জাহান্নাম থেকে মুক্তির মাধ্যমে
৪। রোযা দ্বারা ব্যক্তির চরিএ বিধ্বংসী কুপ্রবৃওি দমন হয় ।
৫।রোযা দ্বারা ব্যক্তির চক্ষু,কর্ণ, জিহ্বা,ও লজ্জা স্থান প্রবৃওি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অবদমিত হয়।
৬।রোযা দ্বারা অন্তরের যাবতীয় মলিণতা ও কুটিলতা দূর হয় ।
৭।রোযা ব্যক্তিকে যাবতীয় অবাঞ্চিত কাজ হতে বিরত থাকতে অভ্যস্ত করে তোলে ।
৮।রোযা শয়তানের আক্রমন প্রতিহত করার শ্রেষ্ঠ হাতিয়ার ।
৯।রোযার কারনে ক্ষুধার অনুভুতি ধনীর অন্তরে দরিদ্রের জন্য সহানুভূতি জাগিয়ে তোলে।এবং দরিদ্রকে সাহায্য করার মানসিকতা সৃষ্টি করে ।
১০।রোযার মাধ্যমে ক্ষুধার তীব্র পীড়নে জর্জরিত গরিবদের প্রতি ধনিদের অন্তরে বেদনার অনুভুত হয়।
১১।রোযা পালনের মাধ্যমে অতীতের গুনাহসমুহের ক্ষমা পাওয়া যায় ।
১২।রোযা পালনের মাধ্যমে অতীতের গুনাহসমুহের ক্ষমা পাওয়া যায় ।
১৩।রোযা বিশ্বমুসলিম সমাজে সাম্য ,মৈএী ভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসার সৃষ্টি করে।
১৫।রোযার মাধ্যমে আত্মসুদ্ধিতাসহ ধৈর্য্য ও নর্ম স্বভাবের গুণে গুণান্বিত হওয়া যায়।
১৬। সৃষ্টার সান্নিধ্য লাভের অন্যতম কারন।
১৭।বিভিন্ন রোগ জীবানু ধ্বংস ও শারীরিক সুস্থতা আনয়ন করে ।
১৮। মানসিক প্রশান্তি লাভের অন্যতম কারন।
সর্বোপরি রোযাই মানুষকে আল্লাহ ও বান্দার অধিকার আদায়ে যোগ্য করে তোলে ।পরিশেষে বলা যায় বান্দাকে সঠিক ও সরল পথে পরিচালিত করার জন্য রোযা হচ্ছে সঠিক গাইডলাইন।সার্বিক দিক থেকে সংযমি হওয়ার মাধ্যমে রোযা মানুষের চরিএ গঠনের এক অনন্য পন্থা।