হযরত আবু বকর সিদ্দিক জীবনী

ইসলামের ইতিহাসে মুসলিম জাহানের  প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর (র)।নবি রাসুলগণের পরই তার মর্যাদা।  ইসলাম গ্রহণের  আগে তিনি  অন্যান্যদের  জাহেলিয়াতের মধ্যে  নিমজ্জিত ছিলেন না । বরং পুত -পবিএ চরি েএর লোক ছিলেন ।তিনি আজিবন  রাসুলুল্লাহর পাশে ছিলেন  ছায়ার মতো । নবুয়তের  আগে নবুয়ত লাভের পরে হযরত মুহাম্মদ (স) কে সমানভাবে  সম্মান ও মর্যাদা দিয়ে  তিনি তাকে অনুসরন করেছেন ।  islamjani.com                                                      ইসলাম  গ্রহণের পর তার জীবন -চরিএ আরও উন্নততর হয়ে উঠে।প্রাথমিক জীবনে  তিনি মানবতার সেবা  করতেন । ইসলাম গ্রহনের  পরে  তিনি  আরও বেশি দুর্গত  মানবতার সাহায্যে এগিয়ে আসেন । ইসলামের  সেবায় তিনি তার সমুদয় ধন -সম্পওি সম্পূর্ণরুপে বিলিয়ে দিয়েছিলেন।

তার প্রকৃত নাম আব্দুল্লাহ। উপনাম ছিল আবু বকর ।  আতিক ও সিদ্দিক ছিল তার উপাধি।  তার পিতা হলেন  হযরত ওসমান ওরফে আবু কুহাফা  এবং মাতা ছিলেন হযরত সালমা ওরফে উম্মুল খায়ের । তার পিতামাতা উভয়েই ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন । তিনি মক্কার কুরাইশ বংশের  তাইম গো েেএ ৫৭৩ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহন করেন । তিনি হযরত মুহাম্মদ (স) এর  চেয়ে  তিন বছরের ছোট ছিলেন ।                                                                                                  হযরত আবু বকর  (রা) জাহেলিয়াতের যুগে বিরাট ব্যবসায়ী  ও সম্পদশালী ব্যক্তি ছিলেন ।  এ  উপলক্ষে তিনি  একাধিকবার সিরিয়া ও ইয়ামেন সফর করেন । আঠার বছর বয়সে  প্রথম বারের মতো তিনি বিদেশ সফর করেন । কুরাইশ বংশের সবচেয়ে  বেশি মর্য াদাসম্পন্ন গোএ আরবের বিভিন্ন সেবামুলক কার্যের জিম্মাদার ছিলেন ।             রক্তপণ আদায়ের  জিম্মােদার ছিলেন ।  রক্তপণ আদায়ের জিম্মাদারি তার উপর ন্যস্ত ছিল । বংশ গণনায় তিনি অভিঙ্গ ছিলেন ।         বাল্যকাল থেকেই  হযরত আবু বকর (রা)  উওম স্বভাব চরি েএর অধিকারি ছিলেন । ইসলাম গ্রহণের আগে থেকেই তিনি মুর্তিপুজা  ও মদ্যপানকে ঘৃণা করতেন ।                                          উচু মর্যাদাঃ                                                                                                            আরবে যথারীতি কোন বাদশাহ  বা শাসনকর্তা ছিল না । হযরত আবু বকর (রা) কুরাইশ বংশেল সবচেয়ে বেশি  মর্যাদাসম্পন্ন  পুরুষ ছিলেন । হযরত আবু বকর (রা) এর বিবেক বুদ্ধি -ধৈর্য্য ও সহনশীলতায়  অত্যান্ত খ্যতিমান ছিলেন ।  একটি বর্ণনায় আছেন যে তিনি কবিতা  আবৃতি করতে পারতেন । অবশ্য ইসলাম গ্রহণের পর তিনি কাব্য চর্চা পরিত্যাগ করেন । ইবনে সায়াদ নবি করিম (সা) এর শোকগাথায় হযরত আবু বকর (রা)  এর কবিতার উদ্বৃতি দিয়েছেন ।

স্বভাব চরিএ ঃ

আবু বকর (রা)  উওম স্বভাবের ছিলেন । হযরত আবু বকর (রা)  এ র প্রকৃতি ছিল  হযরত মুহাম্মদ (স) ও হযরত আবু বকর (র)  এ মধ্যে ঘনিষ্টতা ছিল।  ইসলাম গ্রহনের পর  এই সম্পর্ক  এত নিবিড় হয় যে  হযরত আয়েশা (রা) বলেন আমাদের এমন কোনদিন অতিবাহিত হয়নি ,যেদিন  রাসুলুল্লাহ (স) সকল -সন্ধ্যায় আমাদের  গৃহে পদার্পন করেননি।                                                         ইসলাম গ্রহণঃ হযরত মুহাম্মদ (স)  এর উপর যখন ওহি নাযিল হয় তখন হযরত আবু বকর (রা) বাণিজ্য উপলক্ষে ইয়ামেন ছিলেন । যখন তিনি ফিরে আসেন  তখন কুরাইশ নেতৃবৃন্দ তার সাথে  দেখা করতে যান ।তিনি তাদের কে জিঙ্গেস করেন কোন নতুন খবর আছে? তারা উওর দিল  হ্যা এক নতুন খবর আছে  আর তা হলো  আবু তালিবের ইয়াতিম ভাতিজা  নবুওতের দাবি করছে ।  এ শুনে আবু বকরের  অন্তর কেপে উঠল । কুরাইশ নেতৃবৃন্দ তার নিকট হতে চলে যাওয়ার পর তিনি সরাসরি নবি (স) এর খিদমতে গিয়ে  হাজির হন  এবং তাকে এ সম্পর্কে  প্রশ্ন করেন । শেষ  পর্যন্ত ঐ বৈঠকেই  তিনি  ইসলাম গ্রহণ করেন ।                           আমি যখন তার নিকট  ইসলামের দাওয়াত  পেশ করি, তিনি কোনরুপ চিন্তা -ভাবনা ছাড়াই সাথে সাথে  তা গ্রহণ করছিলেন ।  বয়স্ক পুরুষদের  মধ্যে তিনিই ছিলেন সর্বপ্রথম  মুসলমান।

ইসলামের জন্য আত্মত্যাগঃ                                                                  ইসলামের জন্য  আত্মত্যগকারি ব্যক্তি অনেক দুঃখ কষ্ট ভোগ করেছেন । হযরত আবু বকর (রা) কখানও নিজের জন্য কখনো ভাবতেন না । তিনি ভাবতেন যেন নবি করিম (সা) েএর কোনো কষ্ট না হয় । হযরত আলি (র) বলেন ,               একদিন  আমি দেখি  নবি (স) কে  কুরাইশরা বেষ্টন করে  আছে ।  কেউ তাকে ধরে টানছে ,আবার কেউ ধাক্কা দিচ্ছে। সবাই সমস্বরে বলছে তুমি সেই ব্যক্তি  যে সব খোদাকে এক করে দিয়েছে।                                                                       হযরত আলি (র) বলেন  ঐ দৃশ্য এত ভয়ানক ছিল যে  আমাদের কারো মুহাম্মদ (সা) এর নিকট যাওয়ার সাহস হয়নি । ঠিক তখনই  আবু বকর (রা)  এগিয়ে এলেন কুরাইশদের ধাক্কা দিয়ে নবিজিকে মুক্ত করলেন ।   তিনি সম্পদশালী  ব্যক্তি ছিলেন । ইসলাম গ্রহণ করার পর তার সমুদয় অর্থ ইসলামের জন্য ব্যয় করেন । তিনি অনেক দাস-দাসিকে  তাদের মনিবদের তাদের মনিবদের নির্যাতন হতে মুক্ত করার বিপুল  অর্থে খরিদ  করে মুক্ত করে দেন । হযরত বিলাল (রা)  কে  মুক্ত করা সম্পর্কে হযরত উমর (রা)  মন্তব্য করেছেন ঃহযরত আবু বকর (রা) আমাদের নেতা ,তিনি আমাদের  নেতাকে আযাদ করেছেন ।  হযরত আবু বকর (রা) এর আর্থিক  ত্যাগ সম্পর্কে মহানবি (সা) বলেছেন  আবু                        বকরের সম্পদ দ্বারা আমার যা উপকার হয়েছে  ,অন্য কারো সম্পদ দ্বারা  সেরুপ হয়নি ।                           অন্য এক জায়গায়  রাসূল (সা)  অত্যন্ত করুণা  ও কৃতঙ্গতার সাথে বলেন  নিঃসন্দেহে জান ও মালের দিক দিয়ে  আমার উপর  আবু বকর (রা)  ইসলাম গ্রহণ করেন ,তখন তার নিকট চল্লিশ হাজার দিরহাম অবশিষ্ট ছিল । তিনি ছিলেন নবি করিম (স)  এর  হিজরতের  সাথি  ও গুহার সাথি । তিনি নবি করিম (স)  এর সাথে  সকল যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন ।             খলিফা হিসেবে হযরত আবু বকর (রা) এর প্রথম ভাষন খলিফা নির্বাচিত হওয়ার প্রথম ভাষণে  হযরত আবু বকর (রা) বলেন হে মুসলমানগণ ! আমাকে নেতা নির্বাচন করেছেন  যদিও  আমি আপনাদের  মধ্যে সর্বোওম নই । যদি আমি ভালো কাজ করি ,আমাকে সাহায্য করবেন ,যদি অন্যায় ও খারাপ কাজের দিকে যাই আমাকে সংশোধন করে দিবেন ।     শাসকদের নিকট সত্য প্রকাশ করাই উওম আনুগত্য । সত্য গোপন  রাষ্ট্রদোহীতার  শামিল।                                                                             যে জাতি  আল্লাহর পথে জিহাদ করে না ,তারা লাঞ্চিত অভিশপ্ত  হয় । যে জাতির মধ্যে খারাপ কাজ ব্যপক হয় ,তাদের  উপর  আল্লাহ বালা -মুসিবত  ব্যপক করে দেন ।                                                           হযরত   আবু বকর  (রা)  গণতানি্‌এক  পন্থায়ই খলিফা নির্বাচিত হয়েছিলেন । হযরত মুহাম্মদ (স) রোগ শয্যায় শায়িত থেকে  তাকে নামাযের  ইমামতি ভার দিয়েছিলেন । এর মধ্যে  এই প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত  ছিল যে ,তার তিরোধানের পর আবু বকর খিলাফত প্রাপ্ত হবেন ।

গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাসমুহ ঃ                                                                       হযরত আবু বকর (রা) খলিফা নির্বাচিত হওয়ার পর বহুবিদ সমস্যার  সম্মুখিন হন ।                                                                                         🕳ভন্ড নবিদের আবির্ভাব

🕳  স্বধর্ম ত্যাগীদের বিদ্রোহ

যাকাত অস্বিকারকারিদের গোলযোগ

এছাড়াও হযরত উসামা  ইবনে  যায়েদের  ঘটনা ,যাকে রাসুল (স)  আপন  জীবদ্দশায় মুতার যুদ্ধের  শহীদানের প্রতিশোধ নেওয়ার  জন্য সিরিয়া হামলার শুধু আদেশ দেননি,নিজ হাতে তার পতাকা বেধে দিয়েছিলেন।  এতে অধিকাংশ  বড় সাহাবির  অংশগ্রহণের নির্দেশ ছিল।  অভ্যন্তরীন  গোলযোগের  সময়  সেনাবাহিনির  মদিনার বাইরে যাওয়া কম বিপদ জ্জনক ছিল না | দৃঢ় মনোবল ও সাহসিকতায় হযরত আবু বকর ( র) এ সমস্যার সাফল্যজনক মোকাবেলা করেছিলেন।          মূলত তখন সঙ্কটের এক পাহাড় খলিফার  সামনে মাথা উচু করে দাড়িয়ে ছিল । হযরত আব্দুল্লাহ  ইবনে মাসউদ (রা) বর্ণনা করেন ,রাসুল (স)  এর ইনতিকালের পর মুসলমানদের এমন অবস্থায় সম্মুখিন হতে হয় যে ,যদি আল্লাহ তায়ালা  হযরত আবু বকর (রা)  এর মাধ্যমে আমাদের উপর করুণা না করতেন ,তাহলে আমরা ধ্বংস  হয়ে যেতাম । হযরত আয়েশা (রা)  বলেন  রাসুল (স) এর ইনতিকালের পর আমার পিতার উপর  এমন সব  আকষ্মিক বিপদ আপতিত হয় যে,যদি তা কোন  বিরাট পাহাড়ের উপর নাযিল হত তা হলে  সে পাহাড়ও টুকরা টুকরা হয়ে যেত ।  একদিকে মুনাফিকদের উৎপওি ,অন্যদিকে  আরবের  প্রায় সর্বএ ইসলাম ত্যাগের হিড়িক।                                                                           মহানবি (স) এর ইনতিকালের পর মক্কা ও মদিনা  ব্যতিত সমগ্র আরবে ধর্মত্যাগ ও বিদ্রোহ দানা বেধে ওঠে ।ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর (রা)   এর  সময়ে  স্ব-ধর্ম -ত্যাগি  মুরতাদ , ভন্ড নবির আবির্ভাব  যাকাত প্রদানে  অনিচ্ছা  প্রভৃতি  স্পর্শকাতর বিষয়সমুহ মদিনার  ইসলামি রাষ্ট্রের ভীত নড়বড় করে তোলে। এমতাবস্থায়  হযরত আবু বকর (রা)  তার স্বল্পকালীন খিলাফতের  বেশিরভাগ সময় এ যুদ্ধে ব্যস্ত ছিলেন ।                                                                                                রিদ্দা যুদ্ধের কারণ

Leave a Comment