সূরা বাকারা বাংলা অর্থসহ

পরকাল কি পরকাল কাকে বলে  এটা কোন জগৎ। পরকাল বলা  হয় মৃত্যর পরে যে জীবন শুরু হয় তাকেই পরকাল জীবন বলা হয়। যেমন মানুষ যখন মারা যায় তখন বলা হয় লোকটি ইন্তিকাল করেছে । কিন্তু ইন্তিকাল কথাটি  আরবি শব্দ।মুনতাকির হওয়া transfer  হওয়া । তার মানে  এই যে আমরা  একটি জগতে ছিলাম আরেকটি জগতে ফিরে চলে যাব ।পরপার জগতে চলে যাব  তবে সেই জগৎ সম্পর্কে আমাদের কিছু জানা নাই ।ঐটার নাম হল আলমে আরওয়া।রুহের জগৎ। রুহের জগত থেকে এসেছি আমরা আরয়ে আসবাবে ,বস্তুজগতে এসেছি । এই বস্তুজগৎ থেকে আমরা আবার বিদায় হবো আমরা মুনতাকিল হবো  চলে যাবো আরেকটি জগতে ।

সেই জগতের নাম হচ্ছে আলমে বারযাখ। কোন ব্যক্তি মারা যাবার পর ফিরে এসে আমাদের কেউ বলে নাই যে ঐ জায়গাটা এমন। কবরটা এমন ।বা কবরে গেলে এই এই হয় । এগুলো কেউ ফিরে এসে আমাদের বলে নাই। আমরা যা জেনেছি ভাষাভাষা কিছুই জানা নাই।

এই জায়গাটা কম সময় ।খুবই কম , আর যে জায়গাটা যাব সেই জায়গাটা অনেক লম্বা। যেখানে আছি সেই জায়গাটা এতই ছোট  আর এই পৃথিবিতে  আমি যে নিঃশ্বাস নিচ্ছি বা গ্রহন করছি তার এক মুহুর্ত বিশ্বাস নেই যে আমি পরবর্তিতে আবার নিতে পারবো ।

দুনিয়া এবং মানুষের জীবনটা এতোই ক্ষণস্থায়ী  যে আল্লাহর  একবার আদেশ হয়ে গেলে পরবর্তিতে  নিঃশ্বাস নেবার  আর কোন সুযোগ নেই । আখেরাতের জীবনটা অনন্তকাল । কতকাল থাকতে হবে  সেখানে ,আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেনা । মাওলানা রূন বলেছেন  এই পৃথিবিতে যদি আকাশ ছোয়া পরিমান সরিষা দানা থাকে ,আর সপ্ত আকাশের উপর যদি থাকে একটি ছোট পাখি।

ঐ পাখিটা পৃথিবিতে আসবে  এবং একটি দানা  নিয়ে যাবে সাত আসমানের ওপরে  রাখবে ,সওর হাজার বছর বিশ্রাম করবে । আবার আসবে  একটি দানা নিয়ে গিয়ে সেই স্থানে রাখবে ।ও সওর হাজার বছর বিশ্রাম করবে ।

মাওলারা রুম বলেন এইভাবে পাখিটি সওর হাজার বছরের বিশ্রামে  একটি একটি দানা নিতে নিতে সমস্ত  দানা নেওয়া যদি হয়েও যায়  মানুষের জীবনে  আখিরাতের জীবন শেষ হবে না । কি বিশাল আহ কি জীবন মানুষের এই জীবনের কোন শেষ নেই।

এই পৃথিবির সেকেন্ড ,মিনিট ,ঘন্টা,দিন ও সপ্তাহ মাস বছরের গণনায় ৫০ হাজার বছর  শুধু কিয়ামতের মাঠের বিচারের দিনের সময়টা হবে সুবহান আল্লাহ ।ভাবা যায় কি ।কি হ্দয় বিদারক কথা ।যাহা আল্লাহর আশেকান ছাড়া  অনুভব করা সম্ভব নয়।

এই পরকালের ওপর বিশ্বাস করা মানবকুলে সর্বশ্রেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। মহান আল্লাহ পাকের কুরআনুল মাজিদে  পরকাল সম্বন্ধে  পুঙ্খানুপুঙ্খ রুপে লিপিবদ্ধ আছে ,যাহাতে মুমিনগণের স্মরণাপন্ন হওয়া উচিত। পরকালে যাদের বিশ্বাস থাকবে না তাদের ঈমান থাকবে না । তাদের জীবনের সমস্ত ভালো কাজ গুলো বরবাদ হয়ে যাবে ।

এখন প্রশ্ন হলো পরকালের প্রয়োজন কি ।পরকালের প্রয়োজন হলো মানুষের ভালো  এবং  মন্দ কাজের বিচারিক ফলদান । যেমন কেউ নামায আদায় করলো ,যাকাত দিলো ,হজ্জ করলো ও রোজা রাখলো রমজান মাসের রোজা রাখলো । রমযান মাসের রোজা সওয়াব মহান আল্লাহ পাক নিজ হাতে বান্দাকে দান করবেন ।

চুরি এবং ডাকাতি ছিনতাই অর্থাৎ খারাপ কাজ করলে তার সাজাও দিবেন । যে সমস্ত ভালো কাজ করবেন তার পুরুষ্কার  এই পৃথিবিতে দেওয়া সম্ভব নয়। এই জন্য এমন একটি বিরাট সময়ের দরকার যে প্রত্যেকটি ভালো  এবং মন্দ কাজের ফল আল্লাহ তায়ালা সেইদিন নিজ হাতে দিবেন । ভালো কাজের জন্য জান্নাত এবং মন্দ কাজের জন্য জাহান্নাম তাই পরকালের প্রয়োজন ।

যেন প্রত্যেকটি ভালো কাজের পুর্নাঙ্গ পুরষ্কার  ও প্রত্যেকটি মন্দ কাজের সাজা  দিতে পারা যায়। এই জন্য আল্লাহ সুদির্ঘ পরকালের  সৃষ্টি করেছেন । পরকালে বিশ্বাসি মানুষকে আল্লাহর সকল ভালো কাজের দায়িত্বশীল বানিয়ে দেন । মানুষ যেন না ভাবে যে মানুষকে নিরর্থক  সৃষ্টি করা হয়েছে  যে তার হিসাব হবে না বা তার বিচার হবে না ,এই নশ্বর পৃথিবিতে মানুষ যদি কোন খারাপ কাজ করে তবে তার আদালতে বিচার হয় জেল এবং জরিমানা হয়  তাহলে যে আল্লাহ  উভয় পৃথিবি সৃষ্টি করেছেন তার কথা মানুষ মানবে না তার  বিচার হবে না এটা কি করে হয়। যেহেতু তিনি সবার উপরে মহান আল্লাহ ।

তিনি সব কিছু দেখতে পান ,তাহা যদি জলের  নিচেও হয় অন্ধকারের রা িএতেও হয় তিনি সকল স্থানেই বিরাজমান । কিন্তু আমরাও দেখি মহান আল্লাহ পাকও দেখেন  আমাদের দেখা আর মহান আল্লাহ পাকের দেখা  এক নয় ।  যেমন আমরা অন্ধকারে দেখি না  পাহাড়ের আাড়ালে কি হয়  দেখিনা আমাদের পেছনে কি হয় দেখিনা এমনকি আল্লাহ পাক কেও আমরা দেখতে পাইনা  কিন্তু আল্লাহ পাক সকল স্থানেই সকলকেই   দেখতে পান।  এই বিশ্বাসিই  প্রকৃত মুমিন ব্যক্তিকে মহান আল্লাহ পাকের হুকুম পালনে দায়িত্বশীল  করে তোলে ।

যেমন একশ প্রজাপতির ডানা কেউ এক টাকা দিয়েও কিনবে না  অনুরুপ  এই পৃথিবির মুল্য মহান আল্লাহ পাকের নিকট অনুরুপ মুল্যহীন। মানুষ যেমন  শরিরে যত্ন বেশি নেই কিন্তু  আত্মার যত্ন নেই না পেটের ক্ষুধা যেমন খাদ্য তেমনি আত্মার খোরাক মহান আল্লাহ পাকের আল কুরআন । প্রকৃত মুমিনব্যক্তি  আলকুরআনের মাধ্যমে মহান আল্লাহর হুকুম পালন করিয়া আত্মার আত্মশুদ্ধি লাভ করে । যাহারা পরকালকে উপেক্ষা করিয়া ইহকালকে প্রাধান্য দেই তাহারাই বিপদগামি । কেননা তাহারা আল্লাহকে মানেনা ।

ধন দৈৗলত টাকা পয়সা আত্বমর্যাদা কিছুই তার সংগে যাবে না । যেমন এসেছিল একাকি আবার চলে যাবেও একাকি ।সংেগও কেও থাকবে না । একটু নির্জনে বসে মহান আল্লাহ পাকের বিশাল আসমানকে নিয়ে চিন্তা করলেই বুঝা যায় যে দুনিয়ার  সকল মোহ তাকে একেবারে ভিক্ষুক বানাচ্ছে। পৃথিবি দুনিয়া শব্দটি থেকে এসেছে  এর  একবচন হলো আদনা । নিকৃষ্ট এটার কোন দাম নেই । তেমনি প্রকৃত মুমিন ব্যক্তির নিকটে এই পৃথিবির কোন মুল্য নেই । কেননা আমার দয়ার নবি মায়ার নবি ভালবাসার নবি রাসুলে করিম(সঃ) এর জীবিনি  খোলাফায়ে রাশেদিনদের জীবনি পর্যালোচনা করলে বুঝা যায়  এই যে দুনিয়াকে তারা মুল্যয়ন করেননি ।মানুষের পরম পাওয়ামহান আল্লাহর দাওয়া কুরআন মজিদের দ্বারা আত্বশুদ্ধি লাভ করে পরপার জীবনে স্বর্গ সুখ লাভ করেছেন।

Leave a Comment